মুসলিম আইন অনুযায়ী উইল বা ও ছায়ার বিষয়ে আলোচনা - GOPALCPAUL

Latest

You Can See Some Information From Here

শুভ নববর্ষ ১৪৩১, সাইটে ব্রাউজ করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন

24 February 2020

মুসলিম আইন অনুযায়ী উইল বা ও ছায়ার বিষয়ে আলোচনা

মুসলিম আইনে উইল সংক্রান্ত বিষয় মুসলিম আইনে মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পত্তি উইল বা অছিয়ত, দান বা হেবার প্রবণতা দেখা যায় । মানুষ তার ইচ্ছানুযায়ী কাজ সম্পাদিত করতে চেষ্টা করে এবং আশা করে ভবিষ্যতে ও তার ইচ্ছামত সব কাজ সম্পাদিত হোক । তার যে সহায় -সম্পদ থাকে, তা তার ইচ্ছামত ব্যবহৃত হোক তা সে একান্তভাবে প্রত্যাশা করে আর এ কারণেই মৃত্যুর আগে বা মৃত্যুকালে তার সম্পদ ব্যবহার সম্পকিত অন্তিম অভিব্যক্তি প্রকাশ করে যায় তার ওয়ারিশদের মাঝে । উইল বিষয়টি বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আইন দ্বারা পরিচালিত, অর্থাত্‍ মুসলমানরা ইসলামী আইন দ্বারা এবং হিন্দুরা হিন্দু আইন দ্বারা । ইসলামী আইনে উইল সম্পকে যে বিধান বর্তমান তা দুটি বিশেষ প্রবনতার ফল। এর প্রথমটি হচ্ছে প্রাক-ইসলামী যুগে উইলের অবাধ অধিকার । সে সময়ের সম্পত্তির অধিকারী ব্যক্তি যেভাবে খুশী তার সমস্ত সম্পত্তি যে কোন লোকের বরাবরে উইল করে যেতে পারত । কিন্তু ইসলামের আবিভাবের পর এই অধিকার সংকীর্ণ হয়ে যায় ।মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি কিভাবে বিলি ব্যবস্থা হবে সে সম্পকে কোরআন শরীফে বিদ্যমান । উইল করে তাই আল্লাহর বিধানবলীকে অমান্য করা উচিত নয় । সুতরাং উইলের দ্বারা সম্পত্তির বিলি-বন্দোবস্ত সব সময় বাঞ্চনীয় নয় । দ্বিতীয়ত, বোখারী শরীফের একটি হাদীসে দেখা যায়, রাসুলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার সম্পত্তি আছে সে যতক্ষণ না লিখিত উইল করছে,ততক্ষণ সে যেন দুই রাত শান্তিতে না ঘুমায় । এই হাদীসের মমার্থ খুবই স্পষ্ট । মৃত্যুর আগে সবাই তার বংশধরদের যথারীতি আদেশ নিদের্শ দিয়ে যাবে এবং আইনের সীমার মধ্যে যতটুকু পারা যায় ততটুকু পরিমান সম্পত্তির ব্যবস্থা করা যাবে । নিম্নে এ সর্ম্পকে বিস্তারিত আলোচনা করা গেল: উইল বা অছিয়ত কি উইলের ফরম উইলের স্বাক্ষ্য উইল কে করতে পারেন উইলের বৈশিষ্ট্য উইল করার ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা কার অনুকূলে উইল করা যায় উইলের বিষয়বস্তু উইল সংক্রান্ত কতিপয় বিষয় উইল রদ বা প্রত্যাহার করণ ইচ্ছাপত্র বা উইলের মডেল 1) উইল বা অছিয়ত: মুসলিম আইনে উইলকে অছিয়ত বলা হয়েছে । উইলের আরবী প্রতিশব্দ ওয়াসিয়াত । এর অর্থ ভার অর্পণ, নিদেশ, উপদেশ মিলানো বা কোন জিনিস অন্যদের পযন্ত পৌছানো ।পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক এ সম্পকে মুসলমানদের অনুমতি দিয়েছেন তা করার জন্য । মৃত্যুকালে কিংবা মুত্যুর আগে পরের জন্য নিজ মালিকানার কিছু অংশ নিস্বাথভাবে কাউকে দান করার নাম ওসিয়ত বা উইল ।পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক এ সম্পকে মুসলমানদের আনুমতি দিয়েছেন তা করার জন্য । ওছিয়ত সম্পকে আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন পাকে বলেছেন : "তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যুকাল উপস্থিত হরে সে যদি ধনসম্পত্তি রেখে যায় তবে প্রচলিত প্রথমত তার পিতামাতা ও আত্নীয়-স্বজনের জন্য ওসিয়ত করার বিধান তোমাদেরকে দেওয়া হল ।এটি সাবধানীদের জন্য একটি কর্তব্য ।"(২:১৮০) এই আয়াতে বলা হয়েছে যে,মৃত্যুকালে পিতামাতা ও নিকট-আত্নীয়দের জন্য ওসিয়ত বা উইল করা অবশ্য করণীয় । আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনের সূরা আন নিসায় ১২নম্বর আয়াতে বলেছেন "অছিয়ত পূর্ণ করার পর যেই অছীয়ত করা হইয়াছে, অথবা ঋণ (শোধ)-এর পর, এই শতে যে,(অছিয়্যতকারী ওয়ারেছদের )কাহার ও ক্ষতি না করে, এই নিদের্শ আল্লাহর তরফ হইতে করা হইয়াছে ।" পবিত্র কোরআনের শানে -নুযুলে বলা হয়েছে -ওসিয়্যত অথে সেই ওসিয়্যত্‍ই বুঝিতে হইবে যাহা শরীয়ত সন্মত হয় ।অথাত্‍ , ওসিয়্যত ওয়ারিশের জন্য না হওয়া এবং কাফন-দাফনের ও ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের আতিরিক্ত না হওয়া চাই ।ঋণ ও ওসিয়্যতের মধ্যে ঋনকে অগ্রাধিকার দিতে হয় ।এ সম্পকে আরো বলা হয়েছে -ওসিয়্যত যদি অসদুদ্দেশ্য হয়,যেমন ওয়ারিশদের মধ্যে একজনকে ঠকাইয়া অন্যজনকে বেশী দেওয়ার উদ্দেশ্যে হয়, তবে ইহাও কাযকরী হইবে না ।ওয়ারিশদের অংশ কম করার উদ্দেশ্যে অন্য কোন সত্‍কাযের্ জন্য ওসিয়ত্‍ করিলে বাহ্যত: তাহা কাযকরী হইবে বটে; কিন্ত ওসিয়ত্‍কারী গোনাহগার হইবে । কতখানি সম্পত্তি উইল করা যায় এ সম্পকে আল কুরআন নীরব ।মিশকাতের একটি হাদীছে দেখা যায় যে, রাসুলুল্রাহ (দ:)এক সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ওসিয়্যত করার অনুমতি দিয়েছেন । ইবনে আব্বাছ (রা:) হতে বণিত আছে, তিনি বলেছেন, আল্লাহর রাসূল এরশাদ করেছেন, প্রকৃত উত্তরাধিকারীকে তার জন্য নিধারিত অংশ প্রদান কর।তারপর যা কিছু অবশিষ্ট থাকে তা পাবে ঘনিষ্ঠ উত্তরাধিকারীগণ । সায়াদ ইবনে আক্কাস বলেন,শেষ হজ্জের বছরে রাসুলুল্লাহ (সাল্রালাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আমাকে অনেকবার মক্কাতে দেখতে এসেছেন ।আমি খুব অসুস্থ ছিলাম, সেই কারণে তিনি এসেছিলেন ।আমি রাসুলুল্লাহ (দ:) কে বললাম :আমার মাত্র একটি কন্যা সন্তান আছে, আর কেউ নেই ।আমার সম্পত্তি প্রচুর । আমার কেউ নেই ।আমার অসুখ ও বেড়ে যাচ্ছে ।আমি কি আমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ দাতব্য কাজের জন্য উইল করে যাব ? রাসুলুল্লাহ (দ:) বললেন: না, আমি বললাম: অধেক ।রাসুলুল্লাহ (দ:) বললেন, না ।তারপর বললেন, তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে যাও ।যতটুকুই দাও না কেন তার জন্য আল্লাহ তোমাকে পুরস্কার দিবেন । আর তোমার ওয়ারিশদের ভিখারী করে রেখে যেও না, সেটা ভালো নয় । কাজেই উপরোক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এটি পরিস্কার যে ইসলামী আইনের বিধান মোতাবেক এক তৃতীয়াংশের বেশী উইল করা যায় না ।কোন মুসলমানের সম্পত্তি তার মৃত্যুর পর কিভাবে পরিচালিত বা প্রাপ্ত হবে, সেই মমে তার সম্পত্তি সম্পকে তার অভিপ্রায়ের আইনগত ঘোষণাই হলো উইল বা অছিয়ত । ইসলামী আইনে কোন ব্যক্তিকে সমগ্র সম্পত্তি দান করা যায় কিন্ত এক তৃতীয়াংশের বেশী উইল করা যায়না ।হেদায়া বলে, উইল করা আইনসঙ্গতম তবে তা একটি সীমার মধ্যে ।উইল করার অধিকার মুসলিমদের দুটি বিশেষ সীমার মধ্যে নিয়ন্ত্রিত। প্রথমত, সে তার সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের অধিক সম্পত্তি উইল করতে পারেনা ।দ্বিতীয়ত, সে তার ওয়ারিশদের বরাবরে উইল করতে পারেনা । 2) উইলের ফরম: উইলের জন্য ইসলামী আইনে নিদিষ্ট কোন ফরম নেই।মুসলিমের উইল লিখিত না হলে ও চলে, মৌখিক উইল ও আইনগতভাবে সিদ্ধ।তবে সংগত কারণে প্রায় সবক্ষেত্রে উইল লিখিত হয়ে থাকে।লিখিত না হলে অসুবিধা অনেক।মুখের কথার উপর সত্য প্রতিষ্ঠা করা খুবই কঠিন। উইল লিখিত হলে যে স্বাক্ষরিত হতে হবে এমন কোন কথা নেই।স্বাক্ষরিত হলে প্রত্যায়িত হওয়া আবশ্যক নয়। উইলকারীর অভিপ্রায় বুঝতে পারা গেলেই যথেষ্ঠ। মৃত্যুকালে একটি চিঠি লিখে সম্পত্তির বিন্যাস সম্পকে নিদেশ দিয়ে গেলে সেই চিঠি উইলরুপে গন্য হতে পারে। লেখা সম্ভব না হলেও ,শুধুমাত্র ইশারা বা ভঙ্গীর মাধ্যমে উইল সৃষ্টি করা যায়।ফতোয়া আলমগীরি বলে, মৃত্যুর সময় এক ব্যক্তি কথা বলতে অক্ষম হয়ে পড়ে।মৃত্যুর পরে তার সম্পত্তির কি ব্যবস্তা হবে তা সে অংগভংগি দ্বারা বুঝিয়ে দেয়।সে কি বলতে চায় তা সকলে বুঝতে পারে। এখানে আইনসংগত উইল সৃষ্টি হয়েছে।মুসলিমের উইল প্রত্যায়িত হওয়া অনাবশ্যক।কারণ কুরআন শরীফে সাক্ষ্য সম্পকে যে কথা আছে তা নিদেশমূলক নয়, উপদেশমূলক। উইলের সাক্ষ্য: উইলের জন্য স্বাক্ষরের দরকার নেই, এমন কি সত্যায়িত ও।মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ উইল অস্বীকার করলে তা প্রমাণের জন্য দুজন স্বাক্ষী পেশ করতে হবে। কোনরুপ শর্তযুক্ত করে বা না করে উইল করা যায়।তবে অাইনের ভাষায় উইল হতে হলে, কোন সুনিদিষ্ট জিনিসে বা কোন মুনাফায় বা কোন সুবিধাদির মধ্যে আনুতোষিক বা উপহার প্রদানের পদ্ধতিতে উইলকারীর মৃত্যু পযন্ত তা স্থগিত রেখে অধিকার দান করতে হবে। হানাফী আইন মোতাবেক,একজন মুসলমান তার অন্তেষ্টি ক্রিয়ার ব্যয়ভার ও ঋণ পরিশোধের পর সম্পত্তির অতিরিক্ত বা অবশিষ্টাংশের এক তৃতীয়াংশের অধিক উইলের মাধ্যমে নিস্পন্ন করতে পারেনা। একটি অছিয়ত নামা বা ইষ্টিপত্রের যতদূর সম্ভব প্রত্যেকটি অংশের শব্দাবলী পাঠ করে এক অংশের সঙ্গতি রক্ষা করে সামগ্রিকভাবে ব্যাখা করতে হবে এবং দেখতে হবে যে,উইলটি করা হয়েছে কি না। 3) উইল কে করতে পারেন: যে কোন সাবালক ও সুস্থভাবে সম্পন্ন পুরুষ বা নারী নিজ সম্পত্তির অংশবিশেষ অপরের অনুকূলে উইল করতে পারে। ক) উইল যেহেতু একটি চুক্তি , তাই তা সঠিক হবার জন্য উইলকারীকে সাবালক হতে হবে। ১৮৭৫ সালের সাবালকত্ব আইনের বিধান মতে উইল , হেবা ,ওয়াকফ ইত্যাদি সম্পাদনের ক্ষেত্রে একজন নাবালকত্বের অবসান ঘটে ১৮ বছর বয়সে ,১৫ বছরে নয়। অথাত্‍ উইলকারী অবশ্যই সাবালক হবে। কেউ আদালতের অভিভাবকত্বে থাকলে তাকে ২১ বছর বয়স্ক হতে হবে। খ) উইলে মুক্ত সম্পত্তি থাকতে হবে। শক্তি প্রয়োগ করে উইল করিয়ে নেওয়া যায়না। নিলে ও তা কাযকরী হয় না। গ) সুস্থমন: উইলকারীর উইল করার সময় সুস্থ মনের অধিকারী হতে হবে। বিকৃত মস্তিস্কের হলে হবে না। ঘ) উইলকারী দেউলিয়া হলে মহাজনের অনুমতি ছাড়া কোন উইল আইনসিদ্ধ হবে না। উইলকারীর ঋণ তার সম্পত্তি হতে পরিশোধ করতে হবে। পরিশোধের পর কোন অবশিষ্ট সম্পত্তি থাকে তবে তা সে উইল করতে পারে। 4) উইলের বৈশিষ্ট্য: মুসলিম আইন অনুযায়ী উইল বা অছিয়ত এর সংজ্ঞা বিশ্লষণ করলে যে বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্য করা যায়, সেগুলো নীচে উল্লেখ করা হলো: ১) মুসলিম আইন আনুযায়ী প্রত্যেক সাবালক ও সুস্থমনা ব্যক্তিই উইল বা অছিয়ত করতে পারে। ২) মুসলিম উইলকে বৈধ করবার জন্য বিশেষ কোন আনুষ্ঠিকতার প্রয়োজন নেই। এটি লিখিত দলিল দ্বারা বা মৌখিক হতে পারে। এ সম্পকে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো উইলকারীর ইচ্ছা সুস্পস্টভাবে প্রকাশিত এবং সঠিকভাবে নির্ভরযোগ্য হতে হবে। ৩) উইলকারী তার যে কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি উইল করতে পারে। কিন্তু উইল যেহেতু উইলকারীর মৃত্যুর পর বলবত হয়, সেহেতু উইলকারী মৃত্যুর সময় অবশ্যই উইলে বনিত সম্পত্তির অস্বিত্ব হবে। 5) উইল করবার ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা: মুসলিম আইনের বিধান মতে উইল করবার ক্ষেত্রে নীচের ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে; যেমন :- ১) মুসলিম আইনের বিধান মোতাবেক একজন উইলদাতা যে কোন আগন্তুক ব্যক্তিকে তার সম্পত্তির ১/৩ অংশ এর বেশী উইলমূলে দান করতে পারে না। উইলকারী ১/৩ অংশের বেশী উইল করলেও ১/৩ অংশ কাযকর হবে এবং বাকী অংশ আইনে অগ্রাহ্য হবে । যে অবশিষ্ট ২/৩ অংশ থাকবে তা স্বাভাবিক ওয়ারিশদের মধ্যে বন্টন করা যাবে । ২) মুসলিম আইনের বিধান মতে উইলদাতার মৃত্যুর পর যারা ওয়ারিশ বলে গন্য হবে তাদের বরাবরে কোন সম্পত্তি উইল করতে পারবেনা । কোন সম্পত্তি ওয়ারিশের বরাবরে উইল করলে তা বৈধ হবেনা বটে তবে উইলদাতার মৃত্যুর পর তার অন্যান্য ওয়ারিশেরা অনুমোদন বা সন্মতি দেয় তাহলে উইলটি কাযকর বা বৈধ হবে । ৩) আবার উইলদাতার ঐরুপ কোন উইলে সব ওয়ারিশ যদি অনুমোদন বা সন্মতি না দেয়, তাহলে যারা অনুমোদন বা সন্মতি না দেয় তারা ব্যতীত যারা অনুমোদন করবে বা মেনে নিবে কেবলমাত্র তাদের অংশই সংশ্লিষ্ট উইলগ্রহীতা প্রাপ্ত হবে ।উত্তরাধিকারীদের সন্মতি অবশ্যই উইলকারীর মৃত্যুর পরে প্রদান করতে হবে এবং উইলকারীর জীবদ্দশায় প্রদত্ত সন্মতি অবৈধ হবে ।উইল দলিল রেজিষ্ট্রী করলেই তা বৈধ বলে ধরে নেয়া যায় না।উইলে সন্মতি দানের ক্ষেত্রে নীরবতা সন্মতি বলে ধরে নেয়া যাবে না ।উইল করা হয়নি এবং উইল করার সময় বিদ্যমান ছিল না তাতে সন্মতির প্রযোজন নেই । যদি কিছু উত্তরাধিকারী নাবালক থাকে,তবে তারা সাবালক হওয়ার পর উইলে সন্মতি বা অসন্মতি দিতে পারে ।তাদের নাবালকত্বের সময় অভিভাবকগণ কতৃক প্রদত্ত সন্মতির কোন বৈধতা নেই এবং এ অবস্থায় তারা সাবালক হওয়ার পর উইলের বৈধতা সম্পকে বিবাদ করতে পারে ।অতএব, কোন মা যদি নাবালক সন্তানের পক্ষে সন্মতি দেয় তবে যতদূর সন্তান সংশ্রিষ্ট , ততদূর পযন্ত উইলটি অকাযকর হবে ।একমাত্র উইলকারীর মৃত্যুর পরেই সন্মতি কাযর্কর হবে; সুতরাং উইলের উদ্দেশ্যে উইলকারীর মৃত্যুর সময় যারা উত্তরাধিকারী থাকেন তারাই উত্তরাধিকারী বলে গন্য হবেন, এবং উইল করার সময় যারা ছিলেন তারা নয় । বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে উইল সম্পকিত বিষয়টি বোঝা যাবে : ক) সমস্যা: করিম এর পুত্র ও কন্যা আছে ।তিনি উইল করে ২৫,০০০.০০ টাকা তার কনিষ্ঠ পুত্রকে এবং আর ও ২৫,০০০ টাকা শাহেদ নামে একজন অনাত্নীয়কে দান করেন ।তিনি ৭৫,০০০.০০ টাকার নীট সম্পত্তি রেখে মারা যান ।তার মৃত্যুর পর তার জ্যেষ্ঠপুত্র ও কন্যা উইল কাযকরী করতে অস্বীকার করল । সমাধান: কনিষ্ঠ পুত্রের অনুকূলে ২৫,০০০ টাকার সম্পত্তি উইলের মাধ্যমে দান বৈধ হবে । যদি অবশিষ্ট উত্তরাধিকারীগন তা উইলদাতার মৃত্যুর পর অনুমোদন করে ।প্রম্নমতে, জেষ্ঠপুত্র ও কন্যা উইলটি অনুমোদন করতে অস্বীকার করেছিল । সুতরাং কনিষ্ঠ পুত্রের আনুকূলে উইলটি বাতিল হবে । একজন অনাত্নীয় শাহেদ উইলের মাধ্যমে ২৫,০০০টাকা পেয়েছে ।তার প্রাপ্ত অথের্র পরিমাণ উইলদাতার কাছে সম্পত্তির ৭৫,০০০.০০টাকার এক তৃতীয়াংশের অধিক নয়।সুতরাং উইলটির দান বৈধ হবে । ২) সমস্যা: সাদেক একজন হানাফী মুসলমান, তার সহোদর ভাইয়ের অনুকূলে ৬০০০টাকা প্রদানের একটি উইল করে ।১০-১০-১৯৯৫ তারিখে সাদেক তার স্ত্রী , এক পুত্র, এক কন্যা, এক মৃত পুত্রের পুত্র, এক মৃত কন্যার কন্যা এবং তার সহোদর ভাইকে রেখে মারা যায় ।মৃত্যুর পর তার সম্পত্তির মূল্য বেড়ে দাড়ায় ১২,০০০টাকা । সমাধান: এক্ষেত্রে সাদেক এর মৃত্যুকালে তার পুত্র বর্তমানে থাকায় সহোদর ভাই ওয়ারিশ না হয়ে আগন্তক শ্রেণীভুক্ত হবে ।উইলটি সাদেক এর অন্যান্য ওয়ারিশান সন্মতি দিয়েছিল কিনা তা বলা হয়নি ।তারা সন্মতি না দিয়ে থাকলে উইলটি সম্পূর্ণ কাযর্কর হবে না এবং বাকী ৮,০০০টাকা ওয়ারিশদের মাঝে বন্টিত হবে ।সাদেক ১০-১০-১৯৯৫ তারিখে মারা যাওয়ায় মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান এক্ষেত্রে প্রযোজ্র্য হবে এবং ওয়ারিশদের অংশ হবে নিম্নরুপ : স্ত্রী - ১/৮ = ৬/৪৮ (কারণ সন্তানদি বর্তমান) =১,০০০.০০ একপুত্র -৭/৮ এর ২/৬ =১৪/৪৮ =২,৩৩৩.৩৩ এক কন্যা ৭/৮ এর ১/৬ =৭/৪৮ =১,১৬৬.৪৭ এক মৃত পুত্রের পুত্র-৭/৮ এর ২/৬=১৪/৪৮ =২,৩৩৩.৩৩ এক মৃত কন্যার কন্যা ৭/৮ এর ১/৬ =৭/৪৮ =১,১৬৬.৬৭ সহোদর ভাই-পুত্র বর্তমানে বঞ্চিত ..................... ৮,০০০.০০ পক্ষান্তরে "সাদেক" এর ওয়ারিশেরা উইলটিতে সন্মতি দিয়ে থাকলে উইলটি সম্পূর্ণ অথাত্‍ ৬,০০০.০০ টাকা পযন্ত কাযকর্র হবে এবং বাকী ৬,০০০.০০ টাকা ওয়ারিশদের মধ্যে মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান মোতাবেক নিম্নবণির্তভাবে বন্টিত হবে : স্ত্রী _ ১/৮ = ৬/৪৮ (কারণ সন্তানাদি বর্তমান) = ৭৫০.০০ এক পুত্র - ৭/৮ এর ২/৬ = ১৪/৪৮ =১৭৫০.০০ এক কন্যা -৭/৮ এর ১/৬ = ৭/৪৮ = ৮৭৫.০০ এক মৃত পুত্রের পুত্র - ৭/৮ এর ২/৬ =১৪/৪৮ = ১৭৫০.০০ এক মৃত কন্যার কন্যা - ৭/৮ এর ১/৬ = ৮৭৫.০০ সহোদর ভাই পুত্র বর্তমানে বঞ্চিত ................ ৬০০০.০০ ৩) সমস্যা: কবির মৃত্যর আগে তার স্ত্রীর অনুকূলে ২০,০০০.০০ টাকার একটি উইল করেন । মৃত্যর পর তার দুই পুত্র উক্ত উইলে তাদের সন্মতি দেয় কিন্তু তার দুই মেয়ে এতে সন্মতি দেয় নাই।কবির তার স্ত্রী, দুই পুত্র এবং দুই কন্যা ৩,০০০.০০টাকার আদত মূল্যের সম্পত্তি রেখে মারা যান । সমাধান: এ উইলটির কোন আইনগত মূল্য নাই ।কারন, কবির তার সব ওয়ারিশদের সন্মতি ছাড়াই এক তৃতীয়াংশের অধিক সম্পত্তি তার স্ত্রী সপক্ষে উইল করেছে ।কবিরের সম্পত্তি ৩,০০০.০০ টাকার মধ্যে কবির তার স্ত্রীর অনুকূলে ২,০০০.০০টাকার একটি উইল করেছেন,যাতে তার পুত্র সন্মতি দিলে ও দুই কন্যা সন্মতি প্রদান করেন নাই । অতএব উইলটি বৈধ নয়। উত্তরাধিকারীদের সন্মতি প্রকাশ্য বা পরোক্ষ ও হতে পারে । যেইক্ষেত্রে দেখা যায় যে, উত্তরাধিকারীগন প্রায় ৭৫ বত্‍সর যাবত্‍ উইলটি চ্যালেঞ্জ করেন নাই,সেক্ষেত্রে তারা এতে পরোক্ষভাবে সন্মতি দিয়েছেন বলে গন্য হয় ।সন্মতি প্রদানকারী উত্তরাধিকারীগণকে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং বোধশক্তি সম্পন্ন হলেই চলবে এবং তারা দেউলিয়া হলেও তাতে কিছু আসে যায় না । ৪) কোন মুসলিম তার অন্যান্য ওয়ারিশদের বঞ্চিত করে কেবলমাত্র একজন ওয়ারিশ বরাবরে উইল করতে পারেনা । ৫) উইলকৃত সম্পত্তিটি উইলকারীর পক্ষে আইনানুযায়ী হস্তান্তরযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। ৬) উইলকারী কতৃক উইলটি শর্ত সাপেক্ষে হলে তা উইলের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হবে । ৭) যদি কোন উইলকারী তার মৃত্যুর সময় জন্মগ্রহন করেনি এমন কোন ব্যক্তির বরাবরে উইল করে, তবে উক্ত উইল বৈধ হবে না । কিন্তু উইল করবার দিন হতে ৬ মাসের মধ্যে ভুমিষ্ট হলে মাতৃগভের সন্তানের বরাবর উইল বৈধ বলে গণ্য হবে । ৮) উইলদাতা ভবিষ্যতে পাবে এমন কোন সম্পত্তি উইল করতে পারে না। মুসলিম আইনের বিধান মতে, কোন ভাবী উত্তরাধিকারীকে উইল করা যায়না । যদি কেউ উইল করবার সময় উত্তরাধকারী থাকে এবং উইলদাতার মৃত্যুর সময় যদি না থাকে, তাহলে একে সম্পত্তির ১/৩ অংশ উইল করা হলে তা বৈধ হবে ।আবার যদি কেউ উইল করার সময় ওয়ারিশ না থাকে, কিন্তু উইল দাতার মৃত্যুর সময়ে ওয়ারিশে পরিণত হয়, তাহলে সে উইলমূলে কোন সম্পত্তি পাবেনা। এধরনের উইল আইনবিরোধী হবে ।তবে উইল করবার সময়ে যদি কেউ ওয়ারিশ না থাকে, তাহলে উইলে তার অংশ বৈধ থেকে যাবে ।বিষয়টি পরিস্কারভাবে বোঝার জন্য নীচের উদাহরন দেয়া হলো: ক) জাহেদের একটি ভাই ও বোন আছে ।জাহেদ তার ভাইকে কিছু সম্পত্তি উইল করলো ।জাহেদের জীবিতকালেই তার একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করলো । এমতাবস্থায় ফারায়েজ অনুসারে ভাই আর ওয়ারিশ হলোনা ।সুতরাং ভাইয়ের বরাবর উইলটি বৈধ বলে গন্য হবে ।রহিমের ভাই ১/৩ অংশ পযন্ত উইলের বলে দাবী করতে পারবে ।জাহেদের পুত্র সন্তানটি জন্মগ্রহণ না করলে তা বৈধ হত না । কারণ ভাই মৃত ব্যক্তির পুত্র সন্তান বা পিতা না থাকলে ভাবী ওয়ারিশ থেকে যেত । খ) মারুফের এক পুত্র, স্ত্রী এবং পিতৃহীন এক পৌত্র আছে ।মারুফ তার সম্পত্তির ১/৩ অংশ পৌত্রকে অথাত্‍ নাতিকে উইল করলো এমতাবস্থায় উইল বৈধ হবে, কারণ পুত্র বতর্মানে কোন মৃত পুত্রের পুত্র অথাত্‍ পৌত্র সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়না ।আবার ১৯৬১ সালের ১৫ই জুলাই এর পরে মারুফ মারা গেলে তার আগে মুত পুত্রের পুত্র ওয়ারিশ হবে এবং পৌত্রের বরাবরে উইল বৈধ হবেনা । অতএব উপরোক্ত আলোচনায় বিচায বিষয় হচ্ছে যে, উইলের সময় কে ওয়ারিশ হবে বা না হবে তা নির্ণয় করতে হবে উইলদাতার মৃত্যুর পর । 6) কার অনুকুলে উইল করা যায়: মুসলিম আইনের বিধান মতে যার অনুকূলে উইল করা হয় তাকে উইল প্রাপক বা আরবীতে মুছালাহ বলে ।কাকে উইল করা যায় আরো অনেক প্রশ্ন এসে যায় । যেমন ১) অজ্ঞাত সন্তান বা যে সন্তান জন্ম গ্রহণ করেনি তার অনুকূলে উইল করা যায় কি ? ২) একজন অমুসলিমের অনুকূলে উইল কি আইন সিদ্ধ ? ৩) হত্যাকারীর বরাবরে উইল করা যায় কি না ? ৪) একাধিক ব্যক্তির অনুকূলে উইল কি সঙ্গত ? ১) অজাত সন্তানের অনুকূলে কৃত উইলের বৈধতা ও কাযর্করীতা: যদি কোন উইলকারী তার মৃত্যুর সময় জন্মগ্রহন করেনি এমন কোন ব্যক্তির বরাবরে উইল করে, তবে উক্ত উইল বৈধ হবে না । কিন্তু উইল করবার দিন হতে ৬ মাসের মধ্যে ভুমিষ্ট হলে মাতৃগভের সন্তানের বরাবর উইল বৈধ বলে গণ্য হবে । যেক্ষেত্রে উইল গ্রহণকারী ব্যক্তির অনিধার্রিত সন্তান কিন্তু উইলকারীর গতায়ুর সময় অস্তিত্বশীল, এক্ষেত্রে উইল বৈধ হবে। গর্ভস্থ সন্তান যদি জমজ হয় তাহলে উইল সমানভাবে প্রযোজ্য হবে । যেক্ষেত্রে উইল গ্রহীতা কোন ব্যক্তির সন্তান হয়, যাকে বা যাদেরকে নিদিষ্ট উল্লেখ করা হয়নি, সে বা তারা যদি উইলকারীর মৃত্যুর সময় বর্তমান থাকে, তাহলে উইলানুক্রমে সম্পত্তির অধিকারী হবে । অজ্ঞাত ব্যক্তির বরাবরে উইল, উইলদাতার মৃত্যুর সময় উইলগ্রহীতার অস্তিত্ব না থাকলে উইল বিলুপ্ত হবে এবং উক্ত সম্পত্তি উইল দাতার সম্পত্তিতে পরিণত হবে । ২) অমুসলিমের অনুকূলে উইল: কোন মুসলিম অমুসলিমের অনুকূলে অনুরুপ কোন অমুসলিম ব্যক্তি মুসলিম ব্যক্তির অনুকূলে উইল করতে পারে ।কেননা মানুষের প্রতি মানুষের সদাচারন প্রদর্শন আল্লাহর নিদের্শ । ৩) একাধিক ব্যক্তির অনুকূলে উইল: এক্ষেত্রে দুটি অবস্থার অবতারনা ঘটতে পারে ।যেমন : ক) একই উইলে একজন উত্তরাধিকারী এবং একজন উত্তরাধিকারী নয় ব্যক্তির অনুকূলে উইল এবং খ) একের অধিক উত্তরাধিকারী নয় বা উত্তরাধিকারীকে উইল ক) একই উইলে একজন উত্তরাধিকারী ও একজন উত্তরাধিকারী নয় ব্যক্তির অনুকূলে উইল: এক্ষেত্রে অন্যান্য উত্তরাধিকারীরা সন্মতি না দিলে, উত্তরাধিকারীকে প্রদত্ত দানটি বৈধ হবে না, কিন্তু উত্তরাধিকারী নয় ব্যক্তিকে প্রদত্ত ১/৩ অংশ সম্পত্তির উইল বৈধ হবে ।যেমন রাজিব তার উত্তরাধিকারী এলাহীকে ২/৩ অংশ এর তার উত্তরাধিকারী নয়, আজিজকে ১/৩ অংশ উইল মূলে দান করলো ।রাজিবের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী হালিম ২/৩ অংশ পাবে না যদি অপরাপর উত্তরাধিকারীগণ তাতে সন্মতি দেয় । উত্তরাধিকারী নয় আজিজ ১/৩ অংশ পাবে । খ) একাধিক উত্তরাধিকারী নয় ব্যক্তিদের মধ্যে উইল: একাধিক উত্তরাধিকারী নয় এমন ব্যক্তি যত জনকেই উইল করা হোক না কেন মোট সম্পত্তির ১/৩ অংশের অধিক কাযকরী হবে না । তবে সব উত্তরাধিকারীদের ক্ষেত্রে সব উত্তরাধকারীর সন্মতি ব্যতিরেকে কোন সম্পত্তিই উইল মূলে কারোর বরাবরে হস্তান্তরিত হবে না । ** উত্তরাধিকারীগণ যদি একবার উইলকারী ১/৩ অংশের বেশী সম্পত্তির উইলে সন্মতি দেয় তাহলে তা আর বাতিল করা যাবে না । ** সম্মতি প্রকাশ্য না হলেও চলে, দাতার আচরণে নিদিষ্ট এবং দ্ব্যথহীন মনোভাব ব্যক্ত হলেই হয় । যেমন : ** "কালাম "তিনটি বাড়ী বিশিষ্ট সমগ্র সম্পত্তি উত্তরাধিকারী নয় এমন ব্যক্তির বরাবরে উইল করেছিল ।তার উত্তরাধিকারী দুই পুত্র তা সত্যায়িত করল ।তার মৃত্যুর পর উইলগ্রহীতা উইলকৃত সম্পত্তি ভোগ দখল করতে লাগল ।এতে দুইপুত্রের সন্মতি প্রমানিত হয় । ** উত্তরাধিকারীদের সম্মতি ছাড়া সমগ্র সম্পত্তির উইল বৈধ নয় । উইলের বিষয়বস্ত: উইলের বিষয়বস্ত কে আরবীতে মুসাবিহি বলে ।মুসাবিহিকে অবশ্যই অথের দ্বারা পরিমাপযোগ্য বৈধ মাল বা মালের বৈশিষ্টযুক্ত হতে হবে এবং তা উইলকারীর মালিকানায় থাকতে হবে। হস্তান্তরযোগ্য এবং উইলদাতার মৃত্যুকালে বর্তমান এমন যে কোন ধরনের সম্পত্তি উইলের বিষয়বস্ত হতে পারে ।তবে উইল সম্পাদন কালে উইলকৃত সম্পত্তি উইলদাতার মালিকাধীন না থাকলেও মৃত্যুকালীন সময়ে তা তার হাতে থাকতে হবে। যখন কোন মুসলিম মারা যায়, তখন তার সম্পত্তি থেকে প্রথমে তার দাফন-কাফনের খরচ নেওয়া হবে তারপর তার দেনা পরিশোধ করা হবে ।তারপর যা অবশিষ্ট থাকবে, সেটুকুই তার নীট সম্পত্তি । এই নীট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের বেশী উইল করা যায়না। একটি উদাহরনর মাধ্যমে বিষয়টি বোঝা যাবে - ওমর সাড়ে তিন হাজার টাকা রেখে মারা যান ।একশত টাকা তার দাফনে কাফনে খরচ হয় এবং চারশত টাকা তার দেনা পরিশোধে ব্যয় হয় । অবশিষ্ট থাকে তিন হাজার টাকা । এই তিন হাজার টাকার তিন ভাগের এক ভাগ অথাত্‍ এক হাজার টাকা উইল করা যায় । 7) উইলের বিষযবস্ত, উইলের উদ্দেশ্যের প্রেক্ষিতে, তিন শ্রেণীর হতে পারে ।যেমন : ক) ফরজ কাজের জন্য উইলমূলে দান । খ) ওয়াজিব কাজের উদ্দেশ্যে দান । গ) নকল কাজের উদ্দেশ্যে দান । মুসলিম আইনে উইল সংক্রান্ত বিষয় উইল সংক্রান্ত কতিপয় বিষয়: ক্রমিক গ্রহীতার বরাবরে উইল: একাধিক গ্রহীতার বরাবরে একটি বৈধ উইল করা যাবে।যদি বিভিন্ন উইল গ্রহীতার বরাবরে ক্রমিক উইল করা হয় এবং পূববতী উইল ব্যর্থ হয়, তবে পরবতী উইল ও ব্যথ হবে।কিন্তু এটি কেবল এইক্ষেত্রে ঘটবে যদি উইলকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য পূববতী এবং পরবতী উভয় গ্রহীতারই কল্যাণ বা উপকার, কিন্তু যদি উইলকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য পরবতী উইল গ্রহীতার উপকার করা এবং পূববতী গ্রহীতা কেবলমাত্র সম্পত্তিতে সীমিত স্বার্থ গ্রহণ করে, তবে পূববতী উইলের ব্যথর্তার কারনে পরবতী উইলটি অকার্যকর হবে না। মুসলিম আইনে উইল গ্রহীতার জীবনকালের জন্য উপস্বত্বের উইল বৈধ হবে। শর্তসাপেক্ষে উইল দ্বারা সম্পত্তি প্রদান: কোনরুপ শর্তযুক্ত করে বা না করে উইল করা যায়।তবে অবৈধ শর্তযুক্ত করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং উইল সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর হবে। এমন কোন শর্তসাপেক্ষে সম্পত্তি প্রদান করলে যা উইলটিকে সম্পূর্ণ হতে বাধা প্রদান করে, তাহলে তা পরিপূর্ণ মালিকী স্বত্ব এমনভাবে অর্পণ করবে, যেন কোনরুপ শর্তই আরোপিত হয়নি -এই শতে যে,উইল দাতা উইলের অধীনে ক্রমিক গ্রহীতা নিয়োগের মাধ্যমে জীবন স্বত্ব সৃষ্টি করতে পারেন।সময়ের বিবেচনায় সম্পত্তির উপস্বত্ব সীমিত স্বার্থ সৃষ্টি করা যায় এবং বস্তুর দখল এভাবে যেকোন সীমিত স্বার্থ সাপেক্ষ হতে পারে। উইলে বিকল্প অর্পণ: একটি বিকল্প উইল বা উইলে বিকল্প অর্পণ বৈধ।এক ব্যক্তি তার কন্যার বরাবরে উইলে সম্পত্তি প্রদান করলো এবং তার মৃত্যুর সময় কন্যা মৃত থাকলে কন্যার সন্তানগণ সম্পত্তি পাবে।এই ধরনের উইল বৈধ এবং কন্যার মৃত্যুর কারণে তার সন্তানগণ উইল মূলে সম্পত্তি প্রাপ্ত হবে।যেমন অপুত্রক কোন রাশেদ মেনন তার সম্পত্তির অবশিষ্টাংশটি উইলে এভাবে দান করলো, "আমার কোন পুত্র সন্তান হলে এবং সে আমার মৃত্যুকালে জীবিত থাকলে, আমার সম্পত্তির অবশিষ্টাংশটুকু তাকে দেবে, কিন্তু যদি ঐ পুত্র আমার জীবদ্দশায় কোন পুত্র সন্তান রেখে মারা যায় এবং উক্ত পোত্র যদি আমার মৃত্যুকালে জীবিত থাকে তাহলে আমার নিবাহকগণ সম্পত্তির উক্ত অবশিষ্টাংশটি দান হিসেবে প্রয়োগ করবে।উইলকারী কোন পুত্র না রেখেই মারা গেল, স্থির হয় যে দানটি ভবিষ্যত শর্তযুক্ত নয়।এটি একটি বিকল্প দান।তাই অবশিষ্টাংশটুকু দান হিসেবে ব্যবহৃত হবে। উইলের নিবার্হক: উইলকারী স্বীয় ইচ্ছামত উইলের নিবার্হক নিযুক্ত করতে পারেন।কোন ব্যক্তি তার মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি দেখাশুনা করার জন্য যাকে নিয়োগ করেন তাকে ওসী বা নিবাহক বলে।কোন ব্যক্তি নিবাহক নিযুক্ত না করে মারা গেলে আদালত একজন নিবাহক নিযুক্ত করেন।নিবার্হক নারী পুরুষ উভয়ই হতে পারে।একজন মুসলমান তার উইলের নিবাহক হিসেবে একজন খ্রীষ্টান, হিন্দু বা কোন অমুসলমানকে নিযুক্ত করতে পারেন। একাধিক ব্যক্তি নিবাহক নিযুক্ত হলে প্রত্যেককেই যৌথভাবে কাজ করতে হবে। উইলের প্রবেট: কোন উইল সরকারীভাবে কায়েম করতে হলে আদালতের কাছ হতে যে স্বীকৃতি নিতে হয় তাকেই প্রবেট বলে।প্রবেট ছাড়া আদালত উইল গ্রহণ নাও গ্রহন করতে পারেন।একজন মুসলমান কর্তৃক সম্পাদিত উইল যখন যথাযথ প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হবে, তখন কোন প্রবেট লাভ না করলেও তা সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হবে। উইলের প্রশাসনপত্র: ১৯২৫ সালের উত্তরাধিকার অাইনের ২১২(২) অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি স্ব-সম্পত্তির প্রাপ্য সংক্রান্ত বিষয় ব্যতীত, উইল না করে কোন মুসলমান মারা গেলে তার সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কোন প্রশাসন পত্রের আবশ্যকতা নেই। উইলে সম্পত্তি হ্রাস: আইনানুগ উইল প্রদত্ত সম্পত্তি ১/৩ অংশের অধিক হলে এবং উত্তরাধিকারীগণ তাতে সন্মতি প্রদান না করলে, প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর প্রাপ্যংশ্যের অনুপাতে উক্ত সম্পত্তি হ্রাস পাবে।একটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার বোঝা যাবে : জাহেদ উইল দাতা তার সম্পত্তির ১/২ অংশ মাজেদকে এবং রফিককে ১/৪ অংশ উইল করে দেয়।এখানে যেহেতু দুজনের উইলকৃত সম্পত্তির ১/৩ অংশের অধিক পরিমাণ বিধায় তাদের অংশ আনুপাতিক হারে হ্রাস পাবে।যেমন : মাজেদ পাবে: ১/৩*২/৩ = ২/৯ এবং রফিক পাবে : ১/৩*১/৩=১/৯ অথাত্‍ ২/৯+১/৯ = ৩/৯ = ১/৩ আকস্মিক দান: ঘটতে পারে এমন বিষয়ে উইল বৈধ নয়। উইল রদ বা প্রত্যাহার করণ: মুসলিম আইনের বিধান মতে তার কৃত উইল প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে। উইরকারী তার জীবদ্দশায় যে কোন সময় তার কৃত উইল প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে।কারন এটি তার জন্য বাধ্যতামূলক চুক্তি নয় এবং এর গ্রহন তার মৃত্যুর পরেই অনুষ্ঠিত হয়।গ্রহণের আগে তা কাযকরী হয় না।সুস্পষ্ট বাক্য দ্বারা বা কাযকালের মাধ্যমে উইল প্রত্যাহার করা যায়। উইলদাতা নিজে উইলের দান অস্বীকার করলে উইলটি বাতিল হবে কিনা সন্দেহ আছে, বাতিল না হবার অভিমতটিই গ্রহণযোগ্য মনে হয়।উইলকারীর মৃত্যুর পর হতে তা কাযকরী হয়ে থাকে। অর্ন্তনিহিতভাবে উইল রদ: দাতার কোন কাজের মাধ্যমে উইলের বিষয়বস্তুর সম্প্রসারণ বা মালিকানার বিলুপ্তি হলে উইলটি অন্তনিহিতভাবে রদ হয়ে যায়।যেমন : ক) উইলকৃত জমির উপর উইলদাতা নতুনভাবে বাড়ী নিমাণ করলে তা বাতিল হয়ে যায়। খ) উইলকৃত কোন ধাতব পদার্থ রুপান্তর করে কোন পাত্র প্রস্তুত করলে। গ) উইলকৃত বাড়ীটি বিক্রিমূলে বা দানমূলে হস্তান্তর করলে। পরবতী উইল দ্বারা উইল রদ: আগের উইলকৃত বস্তু বা সম্পত্তিটি যদি উইলকারী পরে অন্যের বরাবরে উইল করে তবে আগের উইলটি বাতিল হয়ে যাবে।তবে একই সম্পত্তি একই উইলে আগের দুব্যক্তিকে উইল মূলে দান করলে প্রথমোক্তটি বাতিল হবে না।উইলগ্রহীতাগণ তা সমান দুইভাগে ভাগ করে নেবে। উইল গ্রহীতা উইলদাতার আগেই মারা গেলে: উইল গ্রহীতা যদি উইলকারীর আগেই মারা যায় উইলটি বিলুপ্তি হবে এবং উইলকৃত সম্পত্তি উইল দাতার সম্পত্তিতে পরিণত হবে। অন্যান্য কারণ: ক) উইল সম্পত্তি অন্যের মালিকানা ভুক্ত হলে; খ) উইল গ্রহীতা উইল দাতার মৃত্যুর পর উইলকৃত সম্পত্তি গ্রহণে অস্বীকার করলে; গ) উইলকৃত সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেলে; ঘ)উইলদাতাকে উইল গ্রহীতা হত্যা করলে; ঙ) উইলকারী চিরতরে পাগল হয়ে গেলে; চ)উইলকারী ধর্ম ত্যাগ করলে; ছ)ইসলামী আইন অনুযায়ী উইল বাতিল হবার মতো কোন অবস্থার অবতারণা ঘটলে। ইচ্ছাপত্র বা উইল এর মডেল পরম করুণাময়ের নামে উইলের বয়ান আরম্ভ করিতেছি যে, আমার বয়স বর্তমানে ৮৫ বত্‍সর হইয়াছে এবং বিগত কয়েকমাস যাবত্‍ আমার শরীর আদৌ ভাল যাইতেছেনা।আমার আশংকা, যে কোনদিন যে কোন সময় আমার জীবনদীপ নিবাপিত হইতে পারে।আমি জীবনে প্রভূত অথ উপার্জন করিয়াছি এবং অনেক সম্পত্তির মালিক হইয়াছি। আমার মৃত্যুর পর আমার পুত্রকন্যা প্রভৃতি আত্নীয়গণের মধ্যে যাহাতে কোন বিবাদ-বিসংবাদ না হয়, তজ্জন্য নিম্নলিখিতরুপে সকলের সম্পত্তি প্রাপ্তির সু-ব্যবস্থা করিলাম। এই উইল আমার মৃত্যুর পর কাযকরী উইলের 'এক্সিকিউটর' নিযুক্ত করিলাম। ১। আমার পৈতৃক বসতবাটী আমার তিনপুত্র ও স্ত্রীর অধিকারে থাকিবে। ২। নিমতায় আমার একটি বাড়ী এবং চরতলীতে দুইটি বাড়ী আছে। আমার জেষ্ঠপুত্র নিমতার বাড়ী পাইবে।এতদ্বতীত,অগ্রনী ব্যাংক এবং পোষ্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক আমার যাহা জমা থাকিবে তাহার এক চতূথাংশ সে পাইবে। ৩। আমার দ্বিতীয় পুত্র .....চরতলীতে অবস্থিত আমার 'রেড রোজ হাউস' নামে দ্বিতল বাড়ীর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার পাইবে। এতদ্বতীত, আমার ব্যান্ক এবং পোষ্ট অফিসের নগদ টাকার এক চতূথাংশ ও পাইবে। ৪। আমার কনিষ্ঠপুত্র ........চরতলীতে অবস্থিত আমার 'বিদিশা'নামক দ্বিতলবাড়ীর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার পাইবে, এবং তত্‍সহ অামার ব্যান্ক ও পোষ্ট অফিসে গচ্ছিত টাকার এক চতূথাংশ পাইবে। ৫। আমার স্ত্রী..........ব্যান্ক এবং পোষ্ট অফিসে রক্ষিত টাকার এক চতূথাংশ পাইবে।তাহা ছাড়া, তাহার নামে আমি ইউনাইটেড ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ব্যান্কের .....শাখায় বসতবাড়ীর যে কক্ষে বর্তমানে বাস করিতেছি সেই কক্ষে সে আমৃত্য বাস করিতে পারিবে। এতদথে স্ব-ইচ্ছায় অন্যের দ্বারা কোনপ্রকারে প্ররোচিত না হইয়া সুস্থশরীরে সরল অন্ত:করণে অত্র উইলপত্র সম্পাদন করিলাম। স্বাক্ষী 8) উইল সংক্রান্ত কতিপয় বিষয়: ক্রমিক গ্রহীতার বরাবরে উইল: একাধিক গ্রহীতার বরাবরে একটি বৈধ উইল করা যাবে।যদি বিভিন্ন উইল গ্রহীতার বরাবরে ক্রমিক উইল করা হয় এবং পূববতী উইল ব্যর্থ হয়, তবে পরবতী উইল ও ব্যথ হবে।কিন্তু এটি কেবল এইক্ষেত্রে ঘটবে যদি উইলকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য পূববতী এবং পরবতী উভয় গ্রহীতারই কল্যাণ বা উপকার, কিন্তু যদি উইলকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য পরবতী উইল গ্রহীতার উপকার করা এবং পূববতী গ্রহীতা কেবলমাত্র সম্পত্তিতে সীমিত স্বার্থ গ্রহণ করে, তবে পূববতী উইলের ব্যথর্তার কারনে পরবতী উইলটি অকার্যকর হবে না। মুসলিম আইনে উইল গ্রহীতার জীবনকালের জন্য উপস্বত্বের উইল বৈধ হবে। শর্তসাপেক্ষে উইল দ্বারা সম্পত্তি প্রদান: কোনরুপ শর্তযুক্ত করে বা না করে উইল করা যায়।তবে অবৈধ শর্তযুক্ত করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং উইল সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর হবে। এমন কোন শর্তসাপেক্ষে সম্পত্তি প্রদান করলে যা উইলটিকে সম্পূর্ণ হতে বাধা প্রদান করে, তাহলে তা পরিপূর্ণ মালিকী স্বত্ব এমনভাবে অর্পণ করবে, যেন কোনরুপ শর্তই আরোপিত হয়নি -এই শতে যে,উইল দাতা উইলের অধীনে ক্রমিক গ্রহীতা নিয়োগের মাধ্যমে জীবন স্বত্ব সৃষ্টি করতে পারেন।সময়ের বিবেচনায় সম্পত্তির উপস্বত্ব সীমিত স্বার্থ সৃষ্টি করা যায় এবং বস্তুর দখল এভাবে যেকোন সীমিত স্বার্থ সাপেক্ষ হতে পারে। উইলে বিকল্প অর্পণ: একটি বিকল্প উইল বা উইলে বিকল্প অর্পণ বৈধ।এক ব্যক্তি তার কন্যার বরাবরে উইলে সম্পত্তি প্রদান করলো এবং তার মৃত্যুর সময় কন্যা মৃত থাকলে কন্যার সন্তানগণ সম্পত্তি পাবে।এই ধরনের উইল বৈধ এবং কন্যার মৃত্যুর কারণে তার সন্তানগণ উইল মূলে সম্পত্তি প্রাপ্ত হবে।যেমন অপুত্রক কোন রাশেদ মেনন তার সম্পত্তির অবশিষ্টাংশটি উইলে এভাবে দান করলো, "আমার কোন পুত্র সন্তান হলে এবং সে আমার মৃত্যুকালে জীবিত থাকলে, আমার সম্পত্তির অবশিষ্টাংশটুকু তাকে দেবে, কিন্তু যদি ঐ পুত্র আমার জীবদ্দশায় কোন পুত্র সন্তান রেখে মারা যায় এবং উক্ত পোত্র যদি আমার মৃত্যুকালে জীবিত থাকে তাহলে আমার নিবাহকগণ সম্পত্তির উক্ত অবশিষ্টাংশটি দান হিসেবে প্রয়োগ করবে।উইলকারী কোন পুত্র না রেখেই মারা গেল, স্থির হয় যে দানটি ভবিষ্যত শর্তযুক্ত নয়।এটি একটি বিকল্প দান।তাই অবশিষ্টাংশটুকু দান হিসেবে ব্যবহৃত হবে। উইলের নিবার্হক: উইলকারী স্বীয় ইচ্ছামত উইলের নিবার্হক নিযুক্ত করতে পারেন।কোন ব্যক্তি তার মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি দেখাশুনা করার জন্য যাকে নিয়োগ করেন তাকে ওসী বা নিবাহক বলে।কোন ব্যক্তি নিবাহক নিযুক্ত না করে মারা গেলে আদালত একজন নিবাহক নিযুক্ত করেন।নিবার্হক নারী পুরুষ উভয়ই হতে পারে।একজন মুসলমান তার উইলের নিবাহক হিসেবে একজন খ্রীষ্টান, হিন্দু বা কোন অমুসলমানকে নিযুক্ত করতে পারেন। একাধিক ব্যক্তি নিবাহক নিযুক্ত হলে প্রত্যেককেই যৌথভাবে কাজ করতে হবে। উইলের প্রবেট: কোন উইল সরকারীভাবে কায়েম করতে হলে আদালতের কাছ হতে যে স্বীকৃতি নিতে হয় তাকেই প্রবেট বলে।প্রবেট ছাড়া আদালত উইল গ্রহণ নাও গ্রহন করতে পারেন।একজন মুসলমান কর্তৃক সম্পাদিত উইল যখন যথাযথ প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হবে, তখন কোন প্রবেট লাভ না করলেও তা সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হবে। উইলের প্রশাসনপত্র: ১৯২৫ সালের উত্তরাধিকার অাইনের ২১২(২) অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি স্ব-সম্পত্তির প্রাপ্য সংক্রান্ত বিষয় ব্যতীত, উইল না করে কোন মুসলমান মারা গেলে তার সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কোন প্রশাসন পত্রের আবশ্যকতা নেই। উইলে সম্পত্তি হ্রাস: আইনানুগ উইল প্রদত্ত সম্পত্তি ১/৩ অংশের অধিক হলে এবং উত্তরাধিকারীগণ তাতে সন্মতি প্রদান না করলে, প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর প্রাপ্যংশ্যের অনুপাতে উক্ত সম্পত্তি হ্রাস পাবে।একটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার বোঝা যাবে : জাহেদ উইল দাতা তার সম্পত্তির ১/২ অংশ মাজেদকে এবং রফিককে ১/৪ অংশ উইল করে দেয়।এখানে যেহেতু দুজনের উইলকৃত সম্পত্তির ১/৩ অংশের অধিক পরিমাণ বিধায় তাদের অংশ আনুপাতিক হারে হ্রাস পাবে।যেমন : মাজেদ পাবে: ১/৩*২/৩ = ২/৯ এবং রফিক পাবে : ১/৩*১/৩=১/৯ অথাত্‍ ২/৯+১/৯ = ৩/৯ = ১/৩ আকস্মিক দান: ঘটতে পারে এমন বিষয়ে উইল বৈধ নয়। উইল রদ বা প্রত্যাহার করণ: মুসলিম আইনের বিধান মতে তার কৃত উইল প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে। উইরকারী তার জীবদ্দশায় যে কোন সময় তার কৃত উইল প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে।কারন এটি তার জন্য বাধ্যতামূলক চুক্তি নয় এবং এর গ্রহন তার মৃত্যুর পরেই অনুষ্ঠিত হয়।গ্রহণের আগে তা কাযকরী হয় না।সুস্পষ্ট বাক্য দ্বারা বা কাযকালের মাধ্যমে উইল প্রত্যাহার করা যায়। উইলদাতা নিজে উইলের দান অস্বীকার করলে উইলটি বাতিল হবে কিনা সন্দেহ আছে, বাতিল না হবার অভিমতটিই গ্রহণযোগ্য মনে হয়।উইলকারীর মৃত্যুর পর হতে তা কাযকরী হয়ে থাকে। অর্ন্তনিহিতভাবে উইল রদ: দাতার কোন কাজের মাধ্যমে উইলের বিষয়বস্তুর সম্প্রসারণ বা মালিকানার বিলুপ্তি হলে উইলটি অন্তনিহিতভাবে রদ হয়ে যায়।যেমন : ক) উইলকৃত জমির উপর উইলদাতা নতুনভাবে বাড়ী নিমাণ করলে তা বাতিল হয়ে যায়। খ) উইলকৃত কোন ধাতব পদার্থ রুপান্তর করে কোন পাত্র প্রস্তুত করলে। গ) উইলকৃত বাড়ীটি বিক্রিমূলে বা দানমূলে হস্তান্তর করলে। পরবতী উইল দ্বারা উইল রদ: আগের উইলকৃত বস্তু বা সম্পত্তিটি যদি উইলকারী পরে অন্যের বরাবরে উইল করে তবে আগের উইলটি বাতিল হয়ে যাবে।তবে একই সম্পত্তি একই উইলে আগের দুব্যক্তিকে উইল মূলে দান করলে প্রথমোক্তটি বাতিল হবে না।উইলগ্রহীতাগণ তা সমান দুইভাগে ভাগ করে নেবে। উইল গ্রহীতা উইলদাতার আগেই মারা গেলে: উইল গ্রহীতা যদি উইলকারীর আগেই মারা যায় উইলটি বিলুপ্তি হবে এবং উইলকৃত সম্পত্তি উইল দাতার সম্পত্তিতে পরিণত হবে। অন্যান্য কারণ: ক) উইল সম্পত্তি অন্যের মালিকানা ভুক্ত হলে; খ) উইল গ্রহীতা উইল দাতার মৃত্যুর পর উইলকৃত সম্পত্তি গ্রহণে অস্বীকার করলে; গ) উইলকৃত সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেলে; ঘ)উইলদাতাকে উইল গ্রহীতা হত্যা করলে; ঙ) উইলকারী চিরতরে পাগল হয়ে গেলে; চ)উইলকারী ধর্ম ত্যাগ করলে; ছ)ইসলামী আইন অনুযায়ী উইল বাতিল হবার মতো কোন অবস্থার অবতারণা ঘটলে। 9) ইচ্ছাপত্র বা উইল এর মডেল পরম করুণাময়ের নামে উইলের বয়ান আরম্ভ করিতেছি যে, আমার বয়স বর্তমানে ৮৫ বত্‍সর হইয়াছে এবং বিগত কয়েকমাস যাবত্‍ আমার শরীর আদৌ ভাল যাইতেছেনা।আমার আশংকা, যে কোনদিন যে কোন সময় আমার জীবনদীপ নিবাপিত হইতে পারে।আমি জীবনে প্রভূত অথ উপার্জন করিয়াছি এবং অনেক সম্পত্তির মালিক হইয়াছি। আমার মৃত্যুর পর আমার পুত্রকন্যা প্রভৃতি আত্নীয়গণের মধ্যে যাহাতে কোন বিবাদ-বিসংবাদ না হয়, তজ্জন্য নিম্নলিখিতরুপে সকলের সম্পত্তি প্রাপ্তির সু-ব্যবস্থা করিলাম। এই উইল আমার মৃত্যুর পর কাযকরী উইলের 'এক্সিকিউটর' নিযুক্ত করিলাম। ১। আমার পৈতৃক বসতবাটী আমার তিনপুত্র ও স্ত্রীর অধিকারে থাকিবে। ২। নিমতায় আমার একটি বাড়ী এবং চরতলীতে দুইটি বাড়ী আছে। আমার জেষ্ঠপুত্র নিমতার বাড়ী পাইবে।এতদ্বতীত,অগ্রনী ব্যাংক এবং পোষ্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক আমার যাহা জমা থাকিবে তাহার এক চতূথাংশ সে পাইবে। ৩। আমার দ্বিতীয় পুত্র .....চরতলীতে অবস্থিত আমার 'রেড রোজ হাউস' নামে দ্বিতল বাড়ীর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার পাইবে। এতদ্বতীত, আমার ব্যান্ক এবং পোষ্ট অফিসের নগদ টাকার এক চতূথাংশ ও পাইবে। ৪। আমার কনিষ্ঠপুত্র ........চরতলীতে অবস্থিত আমার 'বিদিশা'নামক দ্বিতলবাড়ীর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার পাইবে, এবং তত্‍সহ অামার ব্যান্ক ও পোষ্ট অফিসে গচ্ছিত টাকার এক চতূথাংশ পাইবে। ৫। আমার স্ত্রী..........ব্যান্ক এবং পোষ্ট অফিসে রক্ষিত টাকার এক চতূথাংশ পাইবে।তাহা ছাড়া, তাহার নামে আমি ইউনাইটেড ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ব্যান্কের .....শাখায় বসতবাড়ীর যে কক্ষে বর্তমানে বাস করিতেছি সেই কক্ষে সে আমৃত্য বাস করিতে পারিবে। এতদথে স্ব-ইচ্ছায় অন্যের দ্বারা কোনপ্রকারে প্ররোচিত না হইয়া সুস্থশরীরে সরল অন্ত:করণে অত্র উইলপত্র সম্পাদন করিলাম। স্বাক্ষী 10)মুসলিম আইনে উইল সংক্রান্ত বিষয় ক্রমিক গ্রহীতার বরাবরে উইল: একাধিক গ্রহীতার বরাবরে একটি বৈধ উইল করা যাবে।যদি বিভিন্ন উইল গ্রহীতার বরাবরে ক্রমিক উইল করা হয় এবং পূববতী উইল ব্যর্থ হয়, তবে পরবতী উইল ও ব্যথ হবে।কিন্তু এটি কেবল এইক্ষেত্রে ঘটবে যদি উইলকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য পূববতী এবং পরবতী উভয় গ্রহীতারই কল্যাণ বা উপকার, কিন্তু যদি উইলকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য পরবতী উইল গ্রহীতার উপকার করা এবং পূববতী গ্রহীতা কেবলমাত্র সম্পত্তিতে সীমিত স্বার্থ গ্রহণ করে, তবে পূববতী উইলের ব্যথর্তার কারনে পরবতী উইলটি অকার্যকর হবে না। মুসলিম আইনে উইল গ্রহীতার জীবনকালের জন্য উপস্বত্বের উইল বৈধ হবে। শর্তসাপেক্ষে উইল দ্বারা সম্পত্তি প্রদান: কোনরুপ শর্তযুক্ত করে বা না করে উইল করা যায়।তবে অবৈধ শর্তযুক্ত করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং উইল সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর হবে। এমন কোন শর্তসাপেক্ষে সম্পত্তি প্রদান করলে যা উইলটিকে সম্পূর্ণ হতে বাধা প্রদান করে, তাহলে তা পরিপূর্ণ মালিকী স্বত্ব এমনভাবে অর্পণ করবে, যেন কোনরুপ শর্তই আরোপিত হয়নি -এই শতে যে,উইল দাতা উইলের অধীনে ক্রমিক গ্রহীতা নিয়োগের মাধ্যমে জীবন স্বত্ব সৃষ্টি করতে পারেন।সময়ের বিবেচনায় সম্পত্তির উপস্বত্ব সীমিত স্বার্থ সৃষ্টি করা যায় এবং বস্তুর দখল এভাবে যেকোন সীমিত স্বার্থ সাপেক্ষ হতে পারে। উইলে বিকল্প অর্পণ: একটি বিকল্প উইল বা উইলে বিকল্প অর্পণ বৈধ।এক ব্যক্তি তার কন্যার বরাবরে উইলে সম্পত্তি প্রদান করলো এবং তার মৃত্যুর সময় কন্যা মৃত থাকলে কন্যার সন্তানগণ সম্পত্তি পাবে।এই ধরনের উইল বৈধ এবং কন্যার মৃত্যুর কারণে তার সন্তানগণ উইল মূলে সম্পত্তি প্রাপ্ত হবে।যেমন অপুত্রক কোন রাশেদ মেনন তার সম্পত্তির অবশিষ্টাংশটি উইলে এভাবে দান করলো, "আমার কোন পুত্র সন্তান হলে এবং সে আমার মৃত্যুকালে জীবিত থাকলে, আমার সম্পত্তির অবশিষ্টাংশটুকু তাকে দেবে, কিন্তু যদি ঐ পুত্র আমার জীবদ্দশায় কোন পুত্র সন্তান রেখে মারা যায় এবং উক্ত পোত্র যদি আমার মৃত্যুকালে জীবিত থাকে তাহলে আমার নিবাহকগণ সম্পত্তির উক্ত অবশিষ্টাংশটি দান হিসেবে প্রয়োগ করবে।উইলকারী কোন পুত্র না রেখেই মারা গেল, স্থির হয় যে দানটি ভবিষ্যত শর্তযুক্ত নয়।এটি একটি বিকল্প দান।তাই অবশিষ্টাংশটুকু দান হিসেবে ব্যবহৃত হবে। উইলের নিবার্হক: উইলকারী স্বীয় ইচ্ছামত উইলের নিবার্হক নিযুক্ত করতে পারেন।কোন ব্যক্তি তার মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি দেখাশুনা করার জন্য যাকে নিয়োগ করেন তাকে ওসী বা নিবাহক বলে।কোন ব্যক্তি নিবাহক নিযুক্ত না করে মারা গেলে আদালত একজন নিবাহক নিযুক্ত করেন।নিবার্হক নারী পুরুষ উভয়ই হতে পারে।একজন মুসলমান তার উইলের নিবাহক হিসেবে একজন খ্রীষ্টান, হিন্দু বা কোন অমুসলমানকে নিযুক্ত করতে পারেন। একাধিক ব্যক্তি নিবাহক নিযুক্ত হলে প্রত্যেককেই যৌথভাবে কাজ করতে হবে। উইলের প্রবেট: কোন উইল সরকারীভাবে কায়েম করতে হলে আদালতের কাছ হতে যে স্বীকৃতি নিতে হয় তাকেই প্রবেট বলে।প্রবেট ছাড়া আদালত উইল গ্রহণ নাও গ্রহন করতে পারেন।একজন মুসলমান কর্তৃক সম্পাদিত উইল যখন যথাযথ প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হবে, তখন কোন প্রবেট লাভ না করলেও তা সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হবে। উইলের প্রশাসনপত্র: ১৯২৫ সালের উত্তরাধিকার অাইনের ২১২(২) অনুযায়ী মৃত ব্যক্তি স্ব-সম্পত্তির প্রাপ্য সংক্রান্ত বিষয় ব্যতীত, উইল না করে কোন মুসলমান মারা গেলে তার সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কোন প্রশাসন পত্রের আবশ্যকতা নেই। উইলে সম্পত্তি হ্রাস: আইনানুগ উইল প্রদত্ত সম্পত্তি ১/৩ অংশের অধিক হলে এবং উত্তরাধিকারীগণ তাতে সন্মতি প্রদান না করলে, প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর প্রাপ্যংশ্যের অনুপাতে উক্ত সম্পত্তি হ্রাস পাবে।একটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার বোঝা যাবে : জাহেদ উইল দাতা তার সম্পত্তির ১/২ অংশ মাজেদকে এবং রফিককে ১/৪ অংশ উইল করে দেয়।এখানে যেহেতু দুজনের উইলকৃত সম্পত্তির ১/৩ অংশের অধিক পরিমাণ বিধায় তাদের অংশ আনুপাতিক হারে হ্রাস পাবে।যেমন : মাজেদ পাবে: ১/৩*২/৩ = ২/৯ এবং রফিক পাবে : ১/৩*১/৩=১/৯ অথাত্‍ ২/৯+১/৯ = ৩/৯ = ১/৩ আকস্মিক দান: ঘটতে পারে এমন বিষয়ে উইল বৈধ নয়। উইল রদ বা প্রত্যাহার করণ: মুসলিম আইনের বিধান মতে তার কৃত উইল প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে। উইরকারী তার জীবদ্দশায় যে কোন সময় তার কৃত উইল প্রত্যাহার বা বাতিল করতে পারে।কারন এটি তার জন্য বাধ্যতামূলক চুক্তি নয় এবং এর গ্রহন তার মৃত্যুর পরেই অনুষ্ঠিত হয়।গ্রহণের আগে তা কাযকরী হয় না।সুস্পষ্ট বাক্য দ্বারা বা কাযকালের মাধ্যমে উইল প্রত্যাহার করা যায়। উইলদাতা নিজে উইলের দান অস্বীকার করলে উইলটি বাতিল হবে কিনা সন্দেহ আছে, বাতিল না হবার অভিমতটিই গ্রহণযোগ্য মনে হয়।উইলকারীর মৃত্যুর পর হতে তা কাযকরী হয়ে থাকে। অর্ন্তনিহিতভাবে উইল রদ: দাতার কোন কাজের মাধ্যমে উইলের বিষয়বস্তুর সম্প্রসারণ বা মালিকানার বিলুপ্তি হলে উইলটি অন্তনিহিতভাবে রদ হয়ে যায়।যেমন : ক) উইলকৃত জমির উপর উইলদাতা নতুনভাবে বাড়ী নিমাণ করলে তা বাতিল হয়ে যায়। খ) উইলকৃত কোন ধাতব পদার্থ রুপান্তর করে কোন পাত্র প্রস্তুত করলে। গ) উইলকৃত বাড়ীটি বিক্রিমূলে বা দানমূলে হস্তান্তর করলে। পরবতী উইল দ্বারা উইল রদ: আগের উইলকৃত বস্তু বা সম্পত্তিটি যদি উইলকারী পরে অন্যের বরাবরে উইল করে তবে আগের উইলটি বাতিল হয়ে যাবে।তবে একই সম্পত্তি একই উইলে আগের দুব্যক্তিকে উইল মূলে দান করলে প্রথমোক্তটি বাতিল হবে না।উইলগ্রহীতাগণ তা সমান দুইভাগে ভাগ করে নেবে। উইল গ্রহীতা উইলদাতার আগেই মারা গেলে: উইল গ্রহীতা যদি উইলকারীর আগেই মারা যায় উইলটি বিলুপ্তি হবে এবং উইলকৃত সম্পত্তি উইল দাতার সম্পত্তিতে পরিণত হবে। অন্যান্য কারণ: ক) উইল সম্পত্তি অন্যের মালিকানা ভুক্ত হলে; খ) উইল গ্রহীতা উইল দাতার মৃত্যুর পর উইলকৃত সম্পত্তি গ্রহণে অস্বীকার করলে; গ) উইলকৃত সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেলে; ঘ)উইলদাতাকে উইল গ্রহীতা হত্যা করলে; ঙ) উইলকারী চিরতরে পাগল হয়ে গেলে; চ)উইলকারী ধর্ম ত্যাগ করলে; ছ)ইসলামী আইন অনুযায়ী উইল বাতিল হবার মতো কোন অবস্থার অবতারণা ঘটলে। ইচ্ছাপত্র বা উইল এর মডেল পরম করুণাময়ের নামে উইলের বয়ান আরম্ভ করিতেছি যে, আমার বয়স বর্তমানে ৮৫ বত্‍সর হইয়াছে এবং বিগত কয়েকমাস যাবত্‍ আমার শরীর আদৌ ভাল যাইতেছেনা।আমার আশংকা, যে কোনদিন যে কোন সময় আমার জীবনদীপ নিবাপিত হইতে পারে।আমি জীবনে প্রভূত অথ উপার্জন করিয়াছি এবং অনেক সম্পত্তির মালিক হইয়াছি। আমার মৃত্যুর পর আমার পুত্রকন্যা প্রভৃতি আত্নীয়গণের মধ্যে যাহাতে কোন বিবাদ-বিসংবাদ না হয়, তজ্জন্য নিম্নলিখিতরুপে সকলের সম্পত্তি প্রাপ্তির সু-ব্যবস্থা করিলাম। এই উইল আমার মৃত্যুর পর কাযকরী উইলের 'এক্সিকিউটর' নিযুক্ত করিলাম। ১। আমার পৈতৃক বসতবাটী আমার তিনপুত্র ও স্ত্রীর অধিকারে থাকিবে। ২। নিমতায় আমার একটি বাড়ী এবং চরতলীতে দুইটি বাড়ী আছে। আমার জেষ্ঠপুত্র নিমতার বাড়ী পাইবে।এতদ্বতীত,অগ্রনী ব্যাংক এবং পোষ্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক আমার যাহা জমা থাকিবে তাহার এক চতূথাংশ সে পাইবে। ৩। আমার দ্বিতীয় পুত্র .....চরতলীতে অবস্থিত আমার 'রেড রোজ হাউস' নামে দ্বিতল বাড়ীর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার পাইবে। এতদ্বতীত, আমার ব্যান্ক এবং পোষ্ট অফিসের নগদ টাকার এক চতূথাংশ ও পাইবে। ৪। আমার কনিষ্ঠপুত্র ........চরতলীতে অবস্থিত আমার 'বিদিশা'নামক দ্বিতলবাড়ীর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার পাইবে, এবং তত্‍সহ অামার ব্যান্ক ও পোষ্ট অফিসে গচ্ছিত টাকার এক চতূথাংশ পাইবে। ৫। আমার স্ত্রী..........ব্যান্ক এবং পোষ্ট অফিসে রক্ষিত টাকার এক চতূথাংশ পাইবে।তাহা ছাড়া, তাহার নামে আমি ইউনাইটেড ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ব্যান্কের .....শাখায় বসতবাড়ীর যে কক্ষে বর্তমানে বাস করিতেছি সেই কক্ষে সে আমৃত্য বাস করিতে পারিবে। এতদথে স্ব-ইচ্ছায় অন্যের দ্বারা কোনপ্রকারে প্ররোচিত না হইয়া সুস্থশরীরে সরল অন্ত:করণে অত্র উইলপত্র সম্পাদন করিলাম। স্বাক্ষী