হিন্দু
ধর্ম মতে দশ টি সংস্কার আছে। তার অন্যতম হল বিবাহ। হিন্দু ধর্মমতে
বিবাহ হল
একটি সংস্কার। বিবাহ হল নারী ও পুরুষের
বৈধ বা স্বীকৃত দৈহিক ও আত্মিক মিলন।
বৈদিক মতে অস্থির সাথে অস্থির, মজ্জার সাথে মজ্জার মিলনকে বিবাহ বলে। অর্থাৎ দেবতাকে সাক্ষী রেখে ধর্মীয় আচার মেনে কন্যাদান ও কন্যাগ্রহণকে হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিবাহ বলে।
অনুলোম বিবাহঃ উচ্চবর্নের পুরুষ যদি নিম্নবর্নের নারী বিবাহ করে।
প্রতিলোম বিবাহঃ নিম্নবর্নের পুরুষ যদি উচ্চবর্নের নারী বিবাহ করে।
এই বিবাহের বংশধর অনুলোম প্রতিলোম প্রজাতি বিবেচিত হয়।
প্রকৃত অর্থে ধর্ম অনুযায়ী অনুলোম প্রতিলোম বিবাহ স্বীকৃত নয়, যদিও সকল সন্তানই ভগবানের সৃষ্টি। শুক্রাচার্যের একনিষ্ঠ শিষ্য ছিলেন সূত। তার মা ছিল ক্ষত্রিয়, পিতা ব্রাহ্মন। সূত গীতা, পুরান সহ নানা গ্রন্থবিশারদ ছিলেন, কিন্তু নিজের অনুলোম জন্মহেতু নিজেকে শূদ্র বলে পরিচয় দিতেন।
অন্যান্য প্রকারভেদ-(এগুলো হিন্দু আইন অনুযায়ী স্বীকৃত নয়)
##সমন্ধম বিবাহঃ ভারতের কেরালায় মাতৃতান্ত্রিক সমাজে এই রকম বিবাহ দেখা যায়।
##সয়ম্ভর বিবাহঃ কন্যা নিজের পছন্দ অনুযায়ী বর নির্বাচন করে থাকে।
##পনবিবাহঃ কোন প্রতিযগিতা আয়জনের মাধ্যমে বিজয়ী পাত্রকে বর হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
##প্রেম বিবাহঃ পাত্র পাত্রির প্রেমের পরিনতি হিসেবে যে বিবাহ হয়ে থাকে।
##সেবা বিবাহঃ কোন কোন উপজাতিতে এরকম নিয়ম আছে যে, পাত্র যদি বিবাহের খরচ উঠাতে অসমর্থ হয়, তবে তাকে কন্যার গৃহে কাজ করে অর্থ উপার্জন করে কন্যার পানিপ্রার্থনা করতে হয়।
##বিনিময় বিবাহঃ পাত্র/পাত্রি যদি অসচ্ছল/পঙ্গু হয়, তবে তার/ভাইবোনের সাথে পাত্রী/পাত্রের ভাইবোনের বিবাহ প্রথা কে বিনিময় বিবাহ বলে।
সর্বশেষ কথা হল, মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে উপস্থিত থেকে অর্জুন ও সুভদ্রা মায়ের যে বিধান অনুযায়ী বিবাহের আয়োজন করেন সেই নিয়মের বিবাহ সর্বশ্রেষ্ঠ।
বৈদিক মতে অস্থির সাথে অস্থির, মজ্জার সাথে মজ্জার মিলনকে বিবাহ বলে। অর্থাৎ দেবতাকে সাক্ষী রেখে ধর্মীয় আচার মেনে কন্যাদান ও কন্যাগ্রহণকে হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিবাহ বলে।
হিন্দু বিবাহ আট ভাগে বিভক্তঃ
যথা 1) ব্রহ্ম
বিবাহ, 2) দৈব বিবাহ, 3) অর্স বিবাহ, 4) প্রজাপতীয় বিবাহ, 5) গন্ধর্ব বিবাহ, 6)
অসুর বিবাহ, 7) রাক্ষস বিবাহ ও 8) পৈশাস
বিবাহ।
বর্ণিত বিবাহ আবার দু-ভাগে বিভক্তঃ
1) অনুমোদিত বিবাহ(প্রথম চারটি) ও
2) অননুমোদিত
বিবাহ(দ্বিতীয় চারটি)।
অনুমোদিত বিবাহ(প্রথম চারটি)
ক) ব্রহ্ম বিবাহঃ যে বিবাহ কন্যার পিতা বা
অভিভাবক বরের নিকট থেকে কোন প্রকার পণ গ্রহণ না করে কন্যা দান করে তাকে ব্রহ্ম
বিবাহ বলে। এক্ষেত্রে কন্যার পিতা বা অভিভাবক উত্তম চরিত্রের পাত্র খুঁজে বের করে
তাকে কন্যাদান করে থাকেন। পূর্বে শুধু ব্রাহ্মন সমাজে এরকম বিবাহের প্রথা প্রচলন
থাকলেও বর্তমান সময়ে সকল বর্ণ এরকম বিবাহে আবদ্ধ হতে পারে।
খ) দৈব বিবাহঃ যে বিবাগহ কন্যাকে কোন মন্দির
বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পুরোহিতের নিকট সম্প্রদান করা হয় এবং কন্যার পিতা বা
অভিভাবক দক্ষিনার বদলে বলি দানের ব্যবস্থা করেন তাকে দৈব বিবাহ বলে। এ বিবাহে
কন্যার পিতা বা অভিভাবক বরের নিকট হতে সুবিধা গ্রহণ করে থাকে।
গ) অর্স বিবাহঃ যে বিবাহে কন্যার পিতা বা
অভিভাবককে বর একজোড়া গাভী উপহার হিসাবে প্রদান করে তাকে অর্স বিবাহ বলে। বর্তমান
সময়ে এরকম বিবাহ দেখা যায় না। এ বিবাহে কন্যাপক্ষ লাভবান হয়।
ঘ) প্রজাপতীয় বিবাহঃ এটি অনেকটা ব্রহ্ম
বিবাহের মতন মনে হয়। তবে এ বিবাহে বরকে অবিবাহিত না হলেও চলবে। তারমানে এবিবাহে
পুরুষ বহু বিবাহ করতে পারে। এ বিবাহের একটি
অন্যতম শর্ত হল-তোমরা দুজন- ঈহলোক ও ধর্মীয় কাজে সমান অংশিদার হবে। বর্তমান সমাজে
এ বিবাহ প্রচলন আছে।
অননুমোদিত বিবাহ(দ্বিতীয় চারটি)
ক) গন্ধর্ব বিবাহঃ যে বিবাহ বর এবং কনের
পারস্পরিক মত অনুযায়ী বা সম্মতির মাধমে হয় তাকে গন্ধর্ব বিবাহ বলে। অর্থাৎ
যেক্ষেত্রে কনের কোন অভিভাবক থাকে না এবং পাত্র-পাত্রির সম্পতিতে উভয়ের মধ্যে
যৌনমিলন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে গন্ধর্ব বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। বতর্মান সময়ে এ বিবাহ প্রকাশ্যে প্রচলন না থাকলেও ভালবাসার
মাধ্যমে গড়ে ওঠা সম্পর্কে হয়ে থাকে।
খ) অসুর বিবাহঃ যে বিবাহে কনের পিতা বা
অভিভাবক কন্যাকে শুল্কের বিনিময়ে বরের নিকট দান করেন তাকে অসুর বিবাহ বলে। বর্তমান
হিন্দু সমাজে এ বিবাহ স্বীকৃত আছে।
গ) রাক্ষস বিবাহঃ যেক্ষেত্রে কনেকে বা বরকে আটক করে বা জোর
করে যে বিবাহ সম্পন্ন হয় তাকে রাক্ষস বিবাহ বলে। বর্তমান সমাজে এ বিবাহ বিরল। তবে
কোন কোন ক্ষেত্রে বিত্তবানেরা তাদের স্বার্থে এরূপ বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করে থাকতে
পারেন বলে বিজ্ঞানীরা মত দেন
ঘ) পৈচাশ বিবাহঃ কোন ব্যক্তি কোন মেয়ের সাথে
ঘুমন্ত অবস্থায় বা মাতাল অবস্থায় যৌনমিলন করলে যে বিবাহ হয় তাকে পৈচাশ বিবাহ বলে।
কিন্তু হিন্দু বিধান মতে এ বিবাহ বা প্রতারনা বৈধ নয় বলে স্বীকৃত দেয় না। তবে
প্রাচীনকালে এরূপ বিবাহ প্রচলন ছিল। হিন্দু বিধানে নারীর সতীত্ব ও একক স্বামীর উপর
বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। এজন্য ধর্ষণকারী কর্তৃক বিবাহ করার বিধান রয়েছে।
এছাড়াও, প্রাচীনকালে ভারত বর্ষে বিভিন্ন
বর্ণের মধ্যে বিবাহে কোন বাধা নাথাকলেও পরবর্তীতে বর্ণ প্রথা সুদৃঢ় হলে ভিন্ন
ভিন্ন বর্ণে বিবাহ নিন্দিত হত। ভারতের কোথাও কোথাও আজও এনিয়ম চালু আছে। কিন্তু
1923 সনের হিন্দু বিবাহ আঈন প্রচলনের সাথে সাথে অসবর্ণ বিবাহ স্বীকৃতি পায়।
বর্তমানে বাংলাদেশে ও ভারতে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের বিধান চালু আছে। কিন্তু
বাংলাদেশে হিন্দু বিবাহ বিচেছদের বিধানে বিধি নিষোধ আছে। হিন্দু বিবাহ মতে ধর্মীয় ও পার্থিব গুরুত্ব
বিশেষভাবে বহন করে। সেকারণ হিন্দু বিবাহের পরে পারিবারিক বিরোধ কম দেখা যায়।
অনুলোম বিবাহঃ উচ্চবর্নের পুরুষ যদি নিম্নবর্নের নারী বিবাহ করে।
প্রতিলোম বিবাহঃ নিম্নবর্নের পুরুষ যদি উচ্চবর্নের নারী বিবাহ করে।
এই বিবাহের বংশধর অনুলোম প্রতিলোম প্রজাতি বিবেচিত হয়।
প্রকৃত অর্থে ধর্ম অনুযায়ী অনুলোম প্রতিলোম বিবাহ স্বীকৃত নয়, যদিও সকল সন্তানই ভগবানের সৃষ্টি। শুক্রাচার্যের একনিষ্ঠ শিষ্য ছিলেন সূত। তার মা ছিল ক্ষত্রিয়, পিতা ব্রাহ্মন। সূত গীতা, পুরান সহ নানা গ্রন্থবিশারদ ছিলেন, কিন্তু নিজের অনুলোম জন্মহেতু নিজেকে শূদ্র বলে পরিচয় দিতেন।
অন্যান্য প্রকারভেদ-(এগুলো হিন্দু আইন অনুযায়ী স্বীকৃত নয়)
##সমন্ধম বিবাহঃ ভারতের কেরালায় মাতৃতান্ত্রিক সমাজে এই রকম বিবাহ দেখা যায়।
##সয়ম্ভর বিবাহঃ কন্যা নিজের পছন্দ অনুযায়ী বর নির্বাচন করে থাকে।
##পনবিবাহঃ কোন প্রতিযগিতা আয়জনের মাধ্যমে বিজয়ী পাত্রকে বর হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
##প্রেম বিবাহঃ পাত্র পাত্রির প্রেমের পরিনতি হিসেবে যে বিবাহ হয়ে থাকে।
##সেবা বিবাহঃ কোন কোন উপজাতিতে এরকম নিয়ম আছে যে, পাত্র যদি বিবাহের খরচ উঠাতে অসমর্থ হয়, তবে তাকে কন্যার গৃহে কাজ করে অর্থ উপার্জন করে কন্যার পানিপ্রার্থনা করতে হয়।
##বিনিময় বিবাহঃ পাত্র/পাত্রি যদি অসচ্ছল/পঙ্গু হয়, তবে তার/ভাইবোনের সাথে পাত্রী/পাত্রের ভাইবোনের বিবাহ প্রথা কে বিনিময় বিবাহ বলে।
সর্বশেষ কথা হল, মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে উপস্থিত থেকে অর্জুন ও সুভদ্রা মায়ের যে বিধান অনুযায়ী বিবাহের আয়োজন করেন সেই নিয়মের বিবাহ সর্বশ্রেষ্ঠ।