মামলাকৃত জমি বিক্রিতে আইনী বাধা : কি বলে আইন - GOPALCPAUL

Latest

You Can See Some Information From Here

শুভ নববর্ষ ১৪৩১, সাইটে ব্রাউজ করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন

23 April 2021

মামলাকৃত জমি বিক্রিতে আইনী বাধা : কি বলে আইন

কোনো জমি নিয়ে মামলা থাকলে মামলা চলাকালীন সময়ে সেই জমি ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে কি-না, হস্তান্তর করা যাবে কি-না, দান, হেবা, অছিয়ত কিংবা অন্যকোনভাবে জমিটি ট্যান্সফার করা যাবে কি-না? সেসব বিষয়ে আইনি আলোচনা জানতে আজকের এই নিবন্ধ।

প্রায়ই অভিযোগ আসে, কোনো স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে, অথচ কোন এক পক্ষ সেই সম্পত্তি বিক্রি, দান বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তরের চেষ্টা করছে


কিংবা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি করতে এসেছে। সাধারণত মামলার রায় যে ব্যক্তির বিপক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, সেই পক্ষ তড়িঘড়ি করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে স্বল্পমূল্যে সেই হস্তান্তরের চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু কোন সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলমান থাকলে আদালতের অনুমতি ছাড়া সেই সম্পত্তি হস্তান্তর বিষয়ে আইনী বাঁধা আছে।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর ৫২ ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ভেতরে বা বাইরে এখতিয়ার বিশিষ্ট কোনো আদালতে স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে কোনো মামলা বা কার্যক্রম চলাবস্থায় উক্ত মামলা আদালতের সম্ভাব্য কোন ডিক্রি বা আদেশের দ্বারা কোন পক্ষের কোন অধিকার ক্ষুন্ন করবে-এমন সম্ভাবনা থেকেই মামলা চলমান সেই সম্পত্তি বিক্রিতে বাধা রয়েছে। তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে কিংবা আদালত কোন শর্ত আরোপ করলে সেই শর্ত পরিপালন করে হস্তান্তর করা যেতে পারে, যা সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর ৫২ ধারায় স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আইনের এই নীতিকে লিসপেনডেন্স নীতি বলে।

ধরুন, আপনার একটি জমি পার্শ্ববর্তী এক প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, জমির দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে ভুয়া দলিলও বানিয়ে নিয়েছেন। আপনি দখল উচ্ছেদের জন্য দেওয়ানি আদালতে মামলা ঠুকে দিলেন। মামলা চলতে থাকল বেশ কয়েক বছর ধরে। এরই মধ্যে আপনার অগোচরে দখলদার সেই ব্যক্তি প্রতারণামূলকভাবে মামলাকৃত জমিটি তৃতীয় আরেক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিলেন। এখন মামলা শেষে আদালতের রায় যদি আপনার পক্ষে আসে, সেক্ষেত্রে আপনি কার কাছে গিয়ে জমির মালিকানা দাবি করবেন?

আপনি সেই প্রভাবশালী জবরদখলকারী প্রতিবেশীর কাছে গিয়ে জমি চাইলে তিনি বলবেন, এটি তো বিক্রি হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে যার কাছে বিক্রি করা হয়েছে, সেই ব্যক্তির কাছে দাবি নিয়ে গেলে তিনি বলবেন, আমি তো এটি টাকা দিয়েই আপনার প্রতিবেশীর কাছ থেকে কিনেছি। এই জটিলতা নিরসনে আইনের নীতি হলো, কোনো সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকলে, সেই সম্পত্তি আদালতের অনুমতি ছাড়া হস্তান্তর করা যাবে না।
কমন ল’-এর একটি সুপ্রতিষ্ঠিত নীতি হচ্ছে, ‘মামলা রুজু অবস্থায় নতুন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করা উচিত নয়। সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫২ ধারার মূল বক্তব্য হচ্ছে, মামলা চলাকালে মামলার অন্তর্ভুক্ত সম্পত্তি হস্তান্তরিত হলে তার ফলাফল মামলার ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে। তবে আদালত অনুমতি দিলে বা আদালত কোনো শর্ত আরোপ করলে সেই শর্ত অনুসারে তা হস্তান্তর করা যাবে।

৫২ ধারার ব্যাখ্যায় আইনে বলা হয়েছে, এ ধারার উদ্দেশ্যে আরজি দাখিল বা কার্যক্রম শুরু হওয়ার তারিখ থেকে আদালতের চূড়ান্ত ডিক্রি জারি হয়ে সম্পূর্ণ দায় পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত বা তামাদির কাল পার হয়ে যাওয়ার দায় পরিশোধের সময় না হওয়া পর্যন্ত মামলা বা কার্যক্রম চলছে বলে ধরে নিতে হবে। সংগ্রহ/সি.প্র.