কোনো মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানকে কোনো বিনিময় ব্যতিরেকে কোনো সম্পত্তি হস্তান্তর করলে তাকে হেবা বলে। হেবা সম্পন্ন করার জন্য তিনটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-হেবার প্রস্তাব, গ্রহীতার সম্মতি এবং দখল হস্তান্তর। স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি হেবা করা যায়। একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি তাঁর সমুদয় সম্পত্তি বা সম্পত্তির যেকোনো অংশ যে কাউকে হেবা করতে পারেন। সম্পত্তির আয় জীবনকালীন ভোগ করার অধিকার হেবা করা যায়।দান কাকে বলে?১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুযায়ী কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি স্বেচ্ছায় কোনো মূল্য বা বিনিময় ব্যতিরেকে অন্যকে দেওয়াকে দান বলে।
দানের জন্য গ্রহীতার সম্মতির প্রয়োজন। স্থাবর সম্পত্তি দান করতে হলে কমপক্ষে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে রেজিস্টার্ড দলিলের মাধ্যমে করতে হবে। অস্থাবর সম্পত্তি রেজিস্টার্ডদলিল বা দখল হস্তান্তরের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়।হেবা বাতিল করা যায় কি?দখল হস্তান্তরের আগে হেবা বাতিল করা যায়। দখল হস্তান্তরের পরও নম্নিলিখিত ক্ষেত্র ছাড়া হেবা বাতিল করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে কোর্টের ডিক্রি বা নির্দেশ প্রয়োজন হবে-১. স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে বা স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে দান।২. দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে বিবাহের অযোগ্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলে।৩. গ্রহীতা মৃত্যুবরণ করলে।৪. বিক্রয়, দান বা অন্য কোনো প্রকারে ওই সম্পত্তি গ্রহীতা কর্তৃক হস্তান্তরিত হয়ে থাকলে।৫. বিক্রয়, বস্তু হারিয়ে গেলে বা ধ্বংস হয়ে গেলে।৬. দানকৃত সম্পত্তির মূল্য বেড়ে থাকলে।৭. সম্পত্তির প্রকৃতি এমনভাবে পরিবর্তন করা, যা চেনা যায় না।৮. দাতা যদি কোনো বিনিময় গ্রহণ করে থাকেন।হেবা বিল এওয়াজকোনো কিছুর বিনিময়ে হেবা করাকে হেবা বিল এওয়াজ বলে। এটার বৈশষ্ট্যি ঠিক বিক্রয়ের মতো। কাজেই হেবা বিল এওয়াজ সম্পাদনের জন্য দখল হস্তান্তর বাধ্যতামূলক নয়। এ ক্ষেত্রে বিনিময়টি যুক্তিযুক্ত বা পর্যাপ্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে প্রায়ই একটি জায়নামাজ বা এক ছড়া তসবিহ বা একটি কোরআন শরিফের বিনিময়ে হেবা বিল এওয়াজ করা হয়। যেহেতু এটার বৈশষ্ট্যি বিক্রির মতো, কাজেই ১০০ টাকার ঊর্ধ্ব মূল্যমানের সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করতে হয় এবং এই হেবার পরিপ্রেক্ষিতে প্রিয়েমশন করা যাবে। তবে শরিয়ত মোতাবেক জায়নামাজ, তসবিহ বা কোনআন শরিফের মূল্য নির্ধারণ করা যায় না, কাজেই অনুরূপ বিনিময়ে প্রিয়েমশন করা সম্ভব হয় না।হেবা বা শর্ত-উল-এওয়াজআরেক রকম হেবা আছে, যাকে হেবা বা শর্ত-উল-এওয়াজ বলাহয়। বিনিময় প্রদানের শর্তযুক্ত হেবাকে হেবা বা শর্ত-উল-এওয়াজ বলে। হেবা বা শর্ত-উল-এওয়াজ মূলত দান। এটা সম্পাদন হওয়ার জন্য দখল হস্তান্তর আবশ্যক। বিনিময় প্রদানের আগে এটা বাতিলও করা যায়।এ ক্ষেত্রে প্রিয়েমশন চলে না।মুত্যুর পূর্ব মুহুর্তে সম্পত্তি দান করামৃত্যুশয্যাকালীন দানের ক্ষেত্রে হেবার শর্ত অনুযায়ী প্রস্তাব, সম্মতি এবং সম্পত্তির দখল হস্তান্তর প্রয়োজন। তবে মৃত্যুশয্যাকালীন দান উইলের নিয়ম অনুযায়ী দাফন-কাফনের খরচ ও ঋণ বাদে বাকি সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের বেশি করা যাবে না এবং কোনো উত্তরাধিকারীকে করা যাবে না। মৃতু্যর আগমূহুর্তে মানুষের মন খুবই দুর্বল থাকে, তাই এই দানে এমন শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। তবে দাতার মৃতু্যর পর তাঁর উত্তরাধিকারীরা এক-তৃতীয়াংশের বেশি বা উত্তরাধিকারী বরাবর এরূপ দানে সম্মতি দিলে তা বৈধ হবে। যে অসুখে মৃত্যু হয়, তার জন্য শয্যা নেওয়াই মৃত্যুশয্যা। এখানে মৃত্যুভীতি গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হয়, এক বছর ধরে কোনো রোগে ভুগলে আর মৃত্যুভীতি থাকে না, কাজেই সে ক্ষেত্রে মারজ-উল-মউতের প্রশ্ন আসে না।জন্মগ্রহণ করেনি এমন শিশুকে হেবাদান বা হেবার ক্ষেত্রে তাত্ক্ষণিকভাবে দানকৃত সম্পত্তির দখল হস্তান্তর করতে হয়। যার জন্ম হয়নি, তাকে যেহেতু তাত্ক্ষণিক হস্তান্তর করা সম্ভব নয়, কাজেই জন্ম হয়নি এমন কাউকে হেবা করা যায় না।ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে হেবাভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে দানে আইনগত কোনো বাধা নেই। তবে একজন মুসলমান ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক অন্য একজন মুসলমানকে যে দান করেন, তা হচ্ছে হেবা; এই হেবা শুধু দুজন মুসলমানের মধ্যেই হতে পারে।হেবাকৃত সম্পত্তির নামজারিহেবার জন্য লিখিত কাগজের প্রয়োজন নেই। হেবাকৃত সম্পত্তি নামজারি করতে হলে দখল, স্থানীয় তদন্ত ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হেবা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নামজারি করতে পারেন। দখল হস্তান্তরের উত্কৃষ্ট প্রমাণ নামজারি। দলিলে হস্তান্তরের বিষয়টি উল্লেখ করলেওতা দখল হস্তান্তরের প্রমাণ নয়।জনৈক রফিকুল্লাহ তাঁর ছেলের স্ত্রী নূরজাহান বেগমকে ১৯১৬ সালে লিখিত দলিলের মাধ্যমে একটি সম্পত্তি হেবা করেন। ১৯৪২ সাল পর্যন্ত জমিটি মিউটেশন হয়নি। মিউটেশন প্রসিডিং চলাকালে রফিকুল্লাহ মৃতু্যবরণ করেন। এ বিষয়ে কোর্ট সিদ্ধান্ত প্রদান করে যে হেবা করা হয়েছে, গ্রহীতা সম্মতি দিয়েছে; তবে দখল হস্তান্তরের বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি। হেবা করার পর রফিকুল্লাহ জমিটির দখলে ছিল এবং গ্রহীতা দূরে থাকার কারণে বাস্তব দখল গ্রহণ সম্ভব ছিল না। কোর্ট সিদ্ধান্ত প্রদানকরে যে হেবাটি সম্পন্ন হয়নি বিধায় তা বাতিল।লিখিত দলিল ও রেজিস্ট্রি দলিল ছাড়া হেবা করা যায় কি?মুসলিম আইন অনুযায়ী হেবা করতে লিখিত দলিলের প্রয়োজন নেই, রেজিস্ট্রি করারও প্রয়োজন নেই। তবে লিখিত দলিল থাকলে বা রেজিস্ট্রি করলে তা প্রমাণে সহজ হয়। তবে দানের ক্ষেত্রে লিখিত দলিল এবং তা রেজিস্ট্রি করা প্রয়োজন।হেবাকৃত সম্পত্তি ভাড়াটিয়ার দখলে থাকলে তার দখল কিভাবে হস্তান্তরিত হবে?এ ক্ষেত্রে দাতা যদি ভাড়াটিয়াকে সম্পত্তির ভাড়া গ্রহীতা বরাবর প্রদানের অনুরোধ করে বা জমির মালিকানাসংক্রান্ত কাগজপত্র গ্রহীতাকে দিয়ে দেয়, অথবা গ্রহীতা বরাবর নামজারি করা হয়। তবে দখল হস্তান্তরিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।হেবাকারী ও গ্রহীতা যদি দানকৃত সম্পত্তিতে যৌথভাবে বসবাস করে, তবে দখল কিভাবে হস্তান্তরিত হবে?এ ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক দখল হস্তান্তর সম্ভব নয় এবং প্রয়োজনও নেই। দাতা যদি এমন কোনো কাজ করেন, যা থেকে তাঁর দখল হস্তান্তরের ইচ্ছা প্রকাশিত হয়, তাহলেই দখল হস্তান্তর হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। নামফলক পরিবর্তন, নামজারি, সম্পত্তির বিবরণীতে উল্লেখ করা, আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ করা ইত্যাদিভাবে দাতা তাঁর ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারেন।স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে হেবা করার নিয়ম কী?দাতা ও গ্রহীতা দানকৃত সম্পত্তিতে বসবাস করলে কিভাবে দখল হস্তান্তর বোঝানো হয়, তা আগের অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে দান করলে একই নিয়মে দখল হস্তান্তর বোঝাতে হবে। যদি সম্পত্তি ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে, দানের পর স্ত্রীর পক্ষে স্বামী ভাড়া আদায় করে থাকবেন। স্বামী যদি অস্থাবর সম্পত্তি অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রীকে রেজিস্টার্ড দলিল-মূলে দান করে যেস্ত্রী ভালো-মন্দ বুঝতে পারে-এরূপ দান বৈধ।নাবালককে দান করলে কিভাবে হস্তান্তরিত হবে?নাবালকের পক্ষে তার অভিভাবকের কাছে দখল হস্তান্তরিত হলে দান সম্পন্ন হবে। নাবালকের সম্পত্তির অভিভাবক হচ্ছে তার বাবা। বাবার অবর্তমানে বাবা কর্তৃক নিয়োজিত ব্যক্তি, তাদের অবর্তমানে দাদা বা দাদা কর্তৃক নিয়োজিত ব্যক্তি।বাবা বা অভিভাবক কর্তৃক নাবালককে দান করলে দখল কিভাবে হস্তান্তর করতে হয়?এ ক্ষেত্রে দখল হস্তান্তরের প্রয়োজন নেই। দান করার ইচ্ছা এবং ঘোষণাই এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট।যে সম্পত্তি বিভাজন করা যায় না, তা একাধিক ব্যক্তিকে দান করা যায় কি?যেহেতু দানের জন্য দখল হস্তান্তর একান্ত প্রয়োজন, কাজেই বিভাজন করা যায় না বা সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত সুবিধাদি বিভাজন করা যায় না-এমন সম্পত্তি একাধিক ব্যক্তিকে দান করা যায় না।ভবিষ্যতে বিক্রি করতে পারবে না-এমন শর্ত যুক্ত করে দানধরা যাক, কোনো ব্যক্তি একটি সম্পত্তি দান করলেন এবং শর্তযুক্ত করে দিলেন যে ভবিষ্যতে গ্রহীতা সম্পত্তিটি বিক্রি করতে পারবেন না বা নির্দষ্টি কোনো ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিতে পারবেন না এবং এমন অন্য কোনো শর্ত যুক্ত করে দিলেন। এ ক্ষেত্রে দানটি সম্পন্ন হয়েছে, তবে শর্তগুলো বাতিল বলে গণ্য করতে হবে।দখল হস্তান্তর ও দানক. দখল হস্তান্তর করা হয়নি, কিন্তু যদি দানকারী এই দান পরে স্বীকার করে, তবে দানটি অকার্যকর বা অবৈধ হবে না।খ. দখল হস্তান্তরের আগে যেকোনো সময় দান বাতিল করা যায়।গ. নিষিদ্ধ সম্পর্কের ব্যক্তি বরাবর করা দান দখল হস্তান্তরের পর বাতিল করা যাবে না। দখল হস্তান্তরের পর শুধু কোর্টের ডিক্রির মাধ্যমে দান বাতিল হতে পারে।ঘ. গ্রহীতার সম্মতি প্রয়োজন-এমন নির্দেশনা দানেরদলিলে থাকা সত্ত্বেও গ্রহীতা সম্মতি দেয়নি, তবে দানকারীর সম্মতিতে দানকৃত সম্পত্তির দখল নিয়েছে; দানটি বৈধ।ঙ. দানকৃত সম্পত্তির দখল তাত্ক্ষণিক হস্তান্তরের নিয়ম থাকলেও দানকারী দানকৃত সম্পত্তিতে তার জীবনকালে ভোগদখলের শর্ত যুক্ত করলে দান অবৈধ হবেনা।উইলউইল ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ ভবিষ্যৎ ইচ্ছা। মৃতু্যরআগে কোনো ব্যক্তি তাঁর সম্পত্তির যে বিলিব্যবস্থা করে যান, আইনের ভাষায় তা-ই উইল। উইলকে ভবিষ্যৎ দান বলা যেতে পারে, যা দাতার মৃতু্যর পর কার্যকর হয়। ইসলামী আইন অনুযায়ী উইলকেঅসিয়ত বলে। হিন্দু ও খ্রিস্টান আইনে উইলের বিধান আছে, তবে এগুলোর মধ্যে পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।মুসলিম আইন অনুযায়ী উইলের নিয়মমুসলিম আইন অনুযায়ী উইলকে অসিয়ত বলে। সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক কোনো মুসলমান তাঁর অনাত্মীয়কে অর্থাৎ যিনি তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন না, তাঁকে সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অসিয়ত করতে পারেন। কোনো ব্যক্তির মুত্যুর পর তাঁর সম্পত্তির ওপর বেশ কয়েকটি দায় থাকে। ওই ব্যক্তির দাফন-কাফনের ব্যয়, সাকসেশন সার্টিফিকেট বা এ সম্পর্কিত আইনের ব্যয়, মুত্যুশয্যাকালীন ব্যয়, মৃতু্যর তিন মাস আগ পর্যন্ত সেবার ব্যয় এবং সব ঋণ তাঁর সম্পত্তি থেকে মেটাতে হবে। এরপর যে সম্পত্তিথাকবে, তার এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অসিয়ত করা যায়। অসিয়ত মৌখিক বা লিখিত করা যেতে পারে।
হেবানামা বা হেবা দলিল সংক্রান্ত তথ্য:
#হেবা সম্পত্তি বলতে যা বুঝায়?
#দানকে মুসলিম আইনে হেবা বলে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২,এর
১২২ধারায় বলা হয়েছে,"কোন
সম্পত্তি দাতা কর্তৃক কোন
ব্যক্তিকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এর
কোন পণ গ্রহণ
না করে তাৎক্ষণিকভাবে হস্তান্তর
করলে এবং গ্রহীতা বা তার
পক্ষে কোন ব্যক্তি সেটি গ্রহণ
করলে তাকে দান বা হেবা বলে"
#হেবা/দান বৈধ হওয়ার শর্তবলী:-
(১)দাতা কর্তৃক দানের (ইজাব)
ঘোষণা প্রদান।
(২)গ্রহীতা বা তার পক্ষ হতে দান গ্রহন
(কবৃল) করা
(৩)দাতা কর্তৃক গ্রহীতাকে দানকৃত
সম্পত্তির দখল প্রদান। দান গ্রহণের
পূবেই গ্রহীতা মারা গেলে দান
বাতিল হয়ে যাবে।
#হেবা/দানের উপাদানসমূহ:
(১) দাতার জীবনকালের মধ্যে দান
কার্য সম্পন্ন হতে হবে।
(২)দান গ্রহণের পূবে দাতার মৃত্য
হলে দান বাতিল বলে গণ্য হবে।
(৩)দানের সময় সম্পত্তিতে দাতার
মালিকানা ও দখল থাকতে হবে।
(৪)দান স্বেচ্ছায় এবং পণবিহীন
হতে হবে।
(৫)দাতাকে সুস্থ মস্তিস্কসম্পন্ন ও
সাবালক হতে হবে।
(৬)দান গ্রহীতা মানসিক
ভারসাম্যহীন বা নাবালক হলে তার
পক্ষে অভিভাবক দান গ্রহন
করতে পারবেন।
(৭)মুসলিম আইন অনুযায়ী দাতা তার
সমুদয় সম্পত্তি যে কাউকে দান
করতে পারেন। তবে দায়ভাগ
মতে একজন হিন্দু যাদের
ভরণপোষণে আইনত বাধ্য তাদের জন্য
উপযুক্ত বব্যস্থা রাখার পর
বাকী সম্পত্তি দান করতে পারেন।
(৮)দখল হস্তান্তরের পুর্বে দান
প্রত্যাহার করা যায়। দখল হস্তান্তরের
পরে দান প্রত্যাহারের জন্য
আদালতের ডিক্রী লাগবে।
#হেবা দলিল কি বাতিলযোগ্য?
#দখল হস্তান্তরে পূর্বেই কেবল
হেবা দলিল বাতিল করা যায়।
❂❂নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলো বিদ্যমান
থাকিলে, হেবা দলিল বাতিল
করা যায় না।
(১)হেবাকৃত সম্পত্তির দাতা-
গ্রহীতা স্বামী বা স্ত্রী হইলে,
(২)গ্রহীতা মৃত্যূবরণ করিলে,
(৩)দাতা-গ্রহীতার মধ্যে বিবাহ
অযোগ্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকিলে,
(৪)হেবাকৃত সম্পত্তি গ্রতীতা কর্তৃক
বিক্রি বা হস্তান্তরিত হয়ে গেলে,
(৫)হেবাকৃত সম্পত্তি বিলীন বা ধ্বংস
হয়ে গেলে,
(৬)হেবাকৃত সম্পত্তির মূল্য
বেড়ে গেলে,
(৭)হেবাকৃত সম্পত্তির প্রকৃতি সম্পূর্ণ
পরিবর্তন হয়ে গেলে,
(৮)হেবা'টি 'হেবা বিল
এওয়াজ' (বিনিময়ে দান)
হয়ে থাকিলে হেবা দলিল বাতিল
করা যায় না।
উল্লেখিত ক্ষেত্র গুলো বিদ্যমান
না থাকিলে আদালতের মাধ্যমেও
হেবা দলিল বাতিল করা যায়।
#হেবা দলিলের মাধ্যমে প্রাপ্ত জমি কি বিক্রয়যোগ্য ?
# হেবা কৃত
জমি গ্রহীতা বিক্রি সহ যে কোন
ভাবেই হস্তান্তর করতে পারবে।
#হেবা দলিলের রেজিস্ট্রি ফি :
#(১)বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তির বিক্রয়মূল্য ৫
লাখ টাকা পর্যন্ত
হলে রেজিস্ট্রি ফি হবে ৫০০ টাকা।
(২)বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তির বিক্রয়মূল্য ৫
লাখ টাকার বেশি এবং ৫০ লাখ
টাকা পর্যন্ত
হলে রেজিস্ট্রি ফি হবে ১ হাজার
টাকা।
(৩)বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তির বিক্রয়মূল্য ৫০
লাখ টাকার
বেশি হলে রেজিস্ট্রি ফি হবে ২
হাজার টাকা।
(৪)তবে মুসলিম পারসোনাল ল
অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী, পিতা-
মাতা, সন্তান, দাদা-দাদি, নাতি-
নাতনি, সহোদর ভাই-ভাই, সহোদর
বোন-বোন, সহোদর ভাই-বোনের
মধ্যে হেবা বা দান দলিলের
রেজিস্ট্রি ফি মাত্র ১০০|=
প্রখ্যাত মুসলিম আইনবিদ D. F. Mulla হেবার সজ্ঞা দিয়েছেন, “হেবা বা দান হল কোন প্রতিদান বা বিনিময় ব্যতিরেকে কোন সম্পত্তির তাৎক্ষনিক হস্তান্তর যা এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে প্রদান করা হয় এবং অপর ব্যক্তি কর্তৃক তা বা তার পক্ষে গ্রহণ করা হয়।”
W.H. Macnaghten বলেন, “দান হল প্রতিদান ব্যতিরেকে কোন সম্পত্তির অধিকার অর্পণ বা প্রদান করা।”
হেবার আবশ্যকীয় শর্তঃ
• দাতার দান করার ঘোষনা বা ইচ্ছা প্রকাশ।
• গৃহীতা বা তার পক্ষে দান গ্রহন করা।
• অনতিবিলম্বে দান হস্তান্তর।
• গৃহীতা বা তার পক্ষে দান গ্রহন করা।
• অনতিবিলম্বে দান হস্তান্তর।
হেবা করার যোগ্যতাঃ
• সুস্থ মস্তিস্কসম্পন্ন হতে হবে।
• প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে।
• দান অবশ্যই সেচ্ছায় করতে হবে, কারও প্ররোচনা বা বল প্রয়োগে করা যাবে না।
• প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে।
• দান অবশ্যই সেচ্ছায় করতে হবে, কারও প্ররোচনা বা বল প্রয়োগে করা যাবে না।
হেবা প্রত্যাহারঃ
দান, দখল অর্পনের পূর্বে যেকোন সময় হেবা প্রত্যাহার করা যায়। দান হস্তান্তরের পর প্রত্যাহার করতে হলে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে। উপযুক্ত কারণ বিবেচনা করে আদালত দান প্রত্যাহারের ডিক্রী দিতে পারেন তবে এক্ষেত্রে আদালতের এখতিয়ারেরও সীমাবদ্ধতা আছে।
হেবা বা দান রেজিস্ট্রেশনঃ
মৌখিক ভাবেও হেবা করা যায় যদি হেবার শর্তাবলী পালন করা হয়। তবে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে হেবা লিখিতভাবে করতে হয়। এক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন আইন প্রযোজ্য হবে। রেজিস্ট্রেশন আইনের ১৭ ধারা অনুযায়ী লিখিত দলিল টি রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক।